হেজবুল্লাহ বলছে শনিবার তাদের যোদ্ধারা লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী প্রদেশে ইসরায়েলি সেনাদের মোকাবিলা করছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, একই অঞ্চলের একটি মসজিদে তারা ইরান-সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনটির বিরুদ্ধে আঘাত হেনেছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই অঞ্চলে দ্রুত সহিংসতা বাড়ছে। সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েলের স্থল বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। পুরো লেবাননজুড়ে হেজবুল্লাহর ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানছে তারা। যার ফলে দুই দেশের সীমান্তে প্রায় এক বছর ধরে চলমান হামলা-পাল্টা হামলা এখন পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়েছে।
ইসরায়েলের উদ্দেশে ইরানের দ্বিতীয় বারের মতো চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, হেজবোল্লাহর রকেট হামলার তীব্রতা বাড়ানো এবং ইয়েমেন সহ দূর দূরান্তের অবস্থান থেকে ইরানের মিত্রদের হামলা চালানোর দাবি; এ সব মিলিয়ে এ অঞ্চলে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার প্রথম বছর পূরণের কয়েকদিন আগে এসব ঘটনা ঘটেছে।
হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রেক্ষাপটে গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়, যা প্রায় এক বছর ধরে চলছে। সম্প্রতি ইসরায়েল তাদের নজর উত্তরে সরিয়েছে। তাদের লক্ষ্য, হেজবুল্লাহর রকেট হামলার ফলে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া হাজার দশেক ইসরায়েলিকে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী লেবাননের বিভিন্ন অংশে অবস্থিত হেজবুল্লাহর ঘাঁটিগুলোর ওপর তীব্র হামলা শুরু করেছে। এসব হামলায় ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১১০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
শনিবার দিনের শুরুতে হেজবুল্লাহ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। এর আগে তারা ইসরায়েলি সেনাদের পিছু হটতে বাধ্য করার দাবি জানিয়েছিল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তাদের সেনারা সীমান্ত এলাকায় এই সপ্তাহে ২৫০ জন হেজবুল্লাহ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। এছাড়া, শনিবার দিনের শুরুতে তারা বিনতে জাবেইল শহরের ‘একটি মসজিদের ভেতর অবস্থিত সামরিক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে’ হামলা চালানোর কথা জানায়।
লেবাননে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাগুলোতে একজন ইরানী জেনারেল, হেজবুল্লাহর বেশ কয়েকজন কমান্ডার ও সংগঠনটির প্রধান, হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হয়েছেন, যা কয়েক দশকের মধ্যে এই সংগঠনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
লেবাননে ইসরায়েলি বোমা হামলায় অন্তত চারটি হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। অপরদিকে, শুক্রবার জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় ত্রাণ হিসেবে পাঠানো চিকিৎসা সামগ্রীর প্রথম চালানটি বৈরুত বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে।