ইসরায়েলী সেনাবাহিনী বলছে, ইরান তাদের লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। দেশ জুড়ে বিমান হামলার সতর্ক সংকেত বাজানো হয়। বাসিন্দাদের বলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রের কাছে থাকার জন্য।
ইসরায়েলিদের মোবাইল ফোন এবং জাতীয় টেলিভিশনে এই নির্দেশ পাঠানো হয়।
ইরান বলেছে তারা ইসরায়েল লক্ষ্য করে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
তেল আভিভ এবং জেরুজালেমের কাছে জানালা-কাঁপানো প্রচণ্ড বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়। তবে বিস্ফোরণের আওয়াজ ক্ষেপণাস্ত্র তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আওয়াজ, নাকি ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ধ্বংস করার আওয়াজ, নাকি দুটোই, তা তাৎক্ষনিকভাবে পরিষ্কার ছিল না।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘শিগগির’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইরানের পক্ষ থেকে এ ধরনের হামলা হলে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর থেকে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। নাসরাল্লাহ ও হিজবুল্লাহ নেতাদের সাথে ইসরায়েল ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের ডেপুটি কমান্ডারকে হত্যা করে।
ইরান বলেছে, নাসরাল্লাহর মৃত্যু ‘বৃথা যাবে না।’
এদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার দক্ষিণ লেবাননে তীব্র লড়াইয়ের খবর দিয়েছে। অন্যদিকে তার স্থল সেনারা ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে।
সামরিক বাহিনী তার আন্তঃসীমান্ত কর্মকাণ্ডকে “সীমিত,স্থানীয়, লক্ষ্যভিত্তিক অভিযান” হিসেবে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, এটি “উত্তর ইসরায়েলে সুরক্ষা পুনরুদ্ধার” সহ লক্ষ্যগুলোর দিকে লড়াই চালিয়ে যাবে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা করছে।
লেবাননে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক জেনিন হেনিস-প্লাচার্ট বলেন, সহিংসতা বিপজ্জনক উচ্চতায় পৌঁছেছে।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী মিকাতি মঙ্গলবার বলেন, তার দেশ ইতিহাসের অন্যতম বিপজ্জনক অধ্যায়ের মুখোমুখি।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা মঙ্গলবার এটিকে ‘২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধের পর থেকে সংঘাতের সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি’ বলে অভিহিত করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ৪২৫ মিলিয়ন ডলার তহবিলের আবেদন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সোমবার বলেন, “ইসরায়েল ও লেবাননকে সত্যিকারের নিরাপত্তা প্রদান এবং সীমান্তের উভয় পাশের নাগরিকদের তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয় এমন একটি কূটনৈতিক সমাধানকে এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চল এবং বিশ্বজুড়ে আমাদের অংশীদারদের সাথে কাজ চালিয়ে যাবে।”
এদিকে হিজবুল্লাহ উপ-প্রধান নাঈম কাসেম সোমবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বলেন, “ইসরায়েল স্থলপথে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিলে হিজবুল্লাহ বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “প্রতিরোধ বাহিনী যেকোনো স্থল সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।”
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।