জিমি কার্টারঃ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের শততম জন্মদিনে তার একটি মূল্যায়ন

হোয়াইট হাউসে ইসরায়েল-মিশর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের আগে ইসরায়েলি প্রিমিয়ার বিগিনের ভাষণের সময় মিশরের প্রেসিডেন্ট আনওয়ার আল-সাদাত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার হাস্যরত। ফাইল ফটোঃ ২৬ মার্চ, ১৯৭৯।

১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার যখন জর্জিয়ার প্লেইনসে ফিরে যান তখন তিনি পরাজিত ও ভোটারদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত। রিপাবলিকান রনাল্ড রেগান বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। কার্টারকে সেদিন স্বাগত জানিয়েছে মুষলধারায় বৃষ্টি। তার মনের বিষন্নতা ও দেশের অবস্থা প্রতিফলিত হয়েছিল সেই প্রাকৃতিক পরিবেশে।

লেখক ও ইতিহাসবিদ জোনাথন অল্টার বলেন, “দফতরে তিনি রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তিনি রনাল্ড রেগানের কাছে ব্যাপকভাবে পর্যুদস্ত হন। তবে, সারগর্ভ ও দূরদর্শিতার জন্য তিনি সফল।” কার্টার সেন্টারের মানবিক কাজের জন্য আজ অনেকে তাকে চেনেন এবং অল্টার তার এই মানবিক দিকের স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, গোটা বিশ্বে তিনি “শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন, রোগের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করেছেন এবং আশা জাগিয়েছেন”, আর সে কারণেই ২০০২ সালে জিমি কার্টার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।

অল্টার বলেছেন, “১০০টির বেশি দেশে নির্বাচন তত্ত্বাবধান করে তিনি দারুণ কাজ করেছেন। তবে, সাবেক প্রেসিডেন্টদের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের মত নয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার অর্জনের তালিকা অনেক দীর্ঘ, অথচ তা উপেক্ষা করা হয়েছে, ছোট করে দেখানো হয়েছে বা মানুষ গোটাটাই ভুলে গেছেন।”

ফাইল - যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, প্লেইন্স, জর্জিয়া। ২৩ আগস্ট ২০১৫।

১৯৭০-এর দশকে ইরানে জিম্মি সংকট, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ও তেল নিষেধাজ্ঞা হোয়াইট হাউসে কার্টারের কেরিয়ারে সর্বনাশ ঢেকে এনেছিল এবং তার পরম্পরা বা লেগ্যাসির উপর দীর্ঘ ছায়াপাত করেছিল। তবে, এক সময়ের বাদাম চাষী, জর্জিয়ার গভর্নর, প্রেসিডেন্ট ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কার্টারের শততম জন্মদিনে লেখক ও ইতিহাসবিদরা যুক্তরাষ্ট্রের একবারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার ব্যর্থতা ও সাফল্যকে পুনর্মূল্যায়ন করছেন।

অল্টারের লেখা জীবনীগ্রন্থ “হিজ ভেরি বেস্ট: জিমি কার্টার, এ লাইফ” বেশ কয়েকটি বইয়ের অন্যতম যেখানে হোয়াইট হাউসে তার চার বছরকে আর যাই হোক ব্যর্থ বলে উপসংহার টানা হয়নি।

আগস্ট মাসে শিকাগোতে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে ভিওএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অল্টার বলেছেন, “শুধুমাত্র বিখ্যাত ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু করা নয়, বরং পরিবেশ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বহু আইনি কৃতিত্ব রয়েছে যা বারাক ওবামা ও বিল ক্লিন্টন উভয়ের আইনি কৃতিত্বকে সত্যিই ছাপিয়ে যায়।”

কার্টার ১৯৮০ সালে আলাস্কা ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট ল্যান্ডস কনজারভেশন অ্যাক্ট স্বাক্ষর করেন যা ১০০ মিলিয়ন একরের বেশি এলাকা সুরক্ষিত করে যার মধ্যে রয়েছে জমি, জাতীয় উদ্যান, আশ্রয় শিবির, স্মৃতিসৌধ, অরণ্য ও অনেক সংরক্ষিত এলাকা। অল্টার বলেন, এই আইনকে সর্বকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশ আইনগুলির অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয় এখন।