জাতিসংঘে নারী অধিকার কর্মীরা তালিবানের সাথে আলোচনায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন

যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ (ডান থেকে দ্বিতীয়) আফগানিস্তানের ভবিষ্যতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি সম্পর্কে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন৷ জাতিসংঘের সদর দফতর, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

আফগান নারী এবং তাদের আন্তর্জাতিক সমর্থকরা দেশে নারীদের ওপর তালিবানের ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় নারীদের অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানাচ্ছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের প্রাক্কালে আফগানিস্তানের নারী ফোরামের সাথে আয়ারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, সুইজারল্যান্ড এবং কাতার আয়োজিত একটি পার্শ্ব অনুষ্ঠানে, নারী অধিকারকর্মীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তালিবানের দমনমূলক ব্যবস্থার মুখে আফগান নারীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ বলেন, তালিবান শাসনের অধীনে আফগান নারীদের থেকে তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, "কাবুলে একটি পাখি গান গাইতে পারে কিন্তু জনসমক্ষে একজন মেয়ে এবং একজন নারী গাইতে পারে না। এটি অস্বাভাবিক। এটি প্রাকৃতিক নিয়মকে দমন করা। এটি অদ্ভুত।"

স্ট্রিপ তালিবানের নতুন আরোপিত নৈতিকতা আইনের কথা উল্লেখ করেন। এ আইন নারীদের প্রকাশ্যে উচ্চস্বরে কথা বলা নিষিদ্ধ করে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, "যখনই একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী প্রয়োজনের জন্য তার বাড়ি থেকে বের হবে, তখন সে তার কণ্ঠস্বর, মুখ এবং শরীর লুকিয়ে রাখতে বাধ্য।"

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেন, গত মাসে তালিবানের জারি করা আইনটি নারীর অধিকারকে আরও সীমিত করবে।

৩০ অগাস্ট এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেন, "এটি বিদ্যমান বৈষম্যমূলক নীতিগুলিকে শক্তিশালী করে এবং প্রসারিত করে, যেমন বাধ্যতামূলক পোষাক বিধি, নারীদের জন্য একজন পুরুষ অভিভাবক [মাহরাম] থাকার প্রয়োজনীয়তা, এবং জনসাধারণের স্থানগুলিতে নারী ও পুরুষের পৃথকীকরণ।"

২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে, তালিবানরা আফগানিস্তানে নারীদের উপর দমনমূলক ব্যবস্থা আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তাদের মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এবং তাদের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সাথে কাজ করা থেকে বিরত রাখা।

তালিবানের অধীনে, মেয়েরা এবং নারীদের কোনও পুরুষ আত্মীয় ছাড়া দীর্ঘ দূরত্বে ভ্রমণ করতে দেওয়া হয় না এবং তারা পার্ক, পাবলিক বাথ এবং জিমে যেতে পারে না।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইউএনজিএ-তে একটি পার্শ্ব বৈঠকে বলেন, নারীদের সাথে তালিবানের আচরণকে "সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ নিপীড়নের কিছু ব্যবস্থার" সাথে তুলনা করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, "আমরা আফগান নারীদের কণ্ঠস্বরকে প্রসারিত করা অব্যাহত রাখব এবং দেশের সীমানার অভ্যন্তরে এবং বৈশ্বিক মঞ্চে তাদের পূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য আহ্বান জানাতে থাকব।"

ইউসুফজাই বৈষম্য অবসানের দাবি জানালেন

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই ইউএনজিএ-তে বলেন, আফগানিস্তানে নারীদের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করা উচিত।

ইউসুফজাই একটি ফেসবুক পোস্টে বলেন, "আফগানিস্তানে মেয়েদের অধিকারের প্রতি হুমকি সব জায়গায় মেয়েদের জন্য হুমকি। আমি চাই আমরা তালিবানকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে আমাদের নেতাদের উপর চাপ প্রয়োগ করি। আসুন আমাদের অভিন্ন ভবিষ্যতের জন্য কাজ করি।"