জাতিসংঘে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শেষ ভাষণে ইউক্রেন এবং গাজা যুদ্ধের উপর গুরুত্ব আরোপ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার পর হাত নাড়ছেন, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লেবাননে পূর্ণমাত্রা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন এবং বলেন গাজা যুদ্ধের অবসানের সময় এসেছে। তিনি মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কয়েকশ নেতার সামনে তার শেষ ভাষণ দেন।

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, “একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে কোনও পক্ষের স্বার্থলাভ হবে না।” তিনি বলেন, কূটনৈতিক সমাধান করা এখনও সম্ভব।

গাজায় ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে প্রায় এক বছর ধরে চলা যুদ্ধের বিষয়ে, বাইডেন দলগুলিকে একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি নিয়ে চুক্তির "শর্তগুলি চূড়ান্ত করার" আহ্বান জা্নান। এই চুক্তি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন করেছে।

রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনের প্রচেষ্টা সম্পর্কে বাইডেন বলেন, “আমরা ক্লান্ত হতে পারি না। আমরা মুখ ঘুরিয়ে নিতে পারি না, এবং আমরা ইউক্রেনের প্রতি আমাদের সমর্থন কমিয়ে আনবো না, যতক্ষণ না ইউক্রেন একটি ন্যায্য এবং স্থিতিশীল শান্তি নিয়ে জয়ী হয়।"

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ডের মতে বাইডেনের বক্তৃতা একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এসেছে।

তিনি গত সপ্তাহে জাতিসংঘে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "আমরা প্রতি বছর এটি বলি, কিন্তু ইউএনজিএ-এর এই সম্মেলন এমন জটিল এবং আরও চ্যালেঞ্জিং মুহুর্তে আসায় ভাল হয়েছে। “যে সকল সঙ্কট এবং সংঘাতের দিকে মনোযোগ আনতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী এমন তালিকা কেবল বেড়েই চলেছে।"

সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে গাজা। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সাধারণ পরিষদের বাকি অংশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সাধারণ পরিষদ গত সপ্তাহে ইসরায়েলকে আগামী ১২ মাসের মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল বন্ধ করার দাবি জানিয়ে ব্যাপক সমর্থনে একটি প্রস্তাব পাস করেছে । যে ১৪টি সদস্য দেশ না ভোট দিয়েছে তার মধ্যে একটি যুক্তরাষ্ট্র।

টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভোট ওয়াশিংটনের "দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সম্ভাবনাকে দুর্বল করে এমন একতরফা পদক্ষেপের” প্রতি বিরোধিতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

বাইডেন তার প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ করার সময় এই দ্বন্দ্বগুলিকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসাবে চিহ্নিত করেন।

একটি বিষয় বেদনাদায়কভাবে পরিষ্কার: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ এক বছরে গড়িয়ে আসছে। প্রায় ১০০ জন জিম্মি হামাসের কাছে বন্দী বলে ধারণা করা হয়। হোয়াইট হাউস বলেছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা তদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, এবং ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য চুক্তির একটি মূল স্তম্ভ।

কয়েক মাস ধরে বাইডেনের দূতরা কাতার এবং কায়রোর মধ্যে যাওয়া আসা করে দুই পক্ষকে একত্রিত করার চেষ্টা করছে। আর এই কয়েক মাস ধরে তারা একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌছালেও তা বারবার ব্যর্থ হয়েছে।