শ্রী লঙ্কার প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্টকে সোমবার শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। তিনি রাজনীতিতে মানুষের বিশ্বাস ফেরানোর অঙ্গীকার করেছেন। এই দ্বীপরাষ্ট্রের নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ নির্বাচনে তাকে বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করতে সাহায্য করেছে।
পিপল’স লিবারেশন ফ্রন্টের (জেভিপি) স্ব-ঘোষিত মার্ক্সবাদী আনুরা কুমারা দিসানায়াকা তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বিকে শনিবারের ভোটে পর্যুদস্ত করার পর কলম্বোতে ঔপনিবেশিক আমলের প্রেসিডেন্সিয়াল সেক্রেটারিয়েটে শপথ গ্রহণ করেন।
আগের এই প্রান্তিক নেতা, যার দল দুটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং যার ফলে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল, তার দেশের ২০২২ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করেছেন। এই মন্দা সাধারণ শ্রী লঙ্কাবাসীর উপর যন্ত্রণাদায়ক অসচ্ছলতা চাপিয়ে দিয়েছিল।
দিসানায়াকাকে এক অনুষ্ঠানে শপথবাক্য পাঠ করান দেশের প্রধান বিচারপতি। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইনপ্রণেতা, বৌদ্ধ মঠের সদস্য ও সামরিক নেতারা। অনুষ্ঠানের শেষে তারা সকলে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছেন।
শপথ গ্রহণের পর ৫৫ বছর বয়সী দিসানায়াকা বলেন, “রাজনীতিকদের প্রতি মানুষের আস্থা পুরোপুরি ফেরাতে আমি আমার সর্বোচ্চটা করবো।”
“আমি বাজিকর নয়, আমি যাদুকরও নই," তিনি আরও বলেন। "কিছু জিনিস আমি জানি এবং কিছু আমি জানি না। তবে, আমি সেরা পরামর্শটাই সন্ধান করবো এবং আমার সর্বোচ্চটা করবো। এর জন্য আমার সকলের সাহায্যের প্রয়োজন।”
আর্থিক মন্দা
দিসানায়াকা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ৭৫ বছর বয়সী রানিল ভিক্রেমসিঙ্ঘের উত্তরাধিকারী। ভিক্রেমসিঙ্ঘে সরকারের প্রথম বৈদেশিক ঋণ খেলাপ ও কয়েক মাস ধরে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির পরে দেশের চূড়ান্ত আর্থিক সংকটকালে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন।
ভিক্রেমসিঙ্ঘে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) বেল-আউটের শর্তাবলী অনুযায়ী ব্যাপক কর বৃদ্ধি ও অন্যান্য কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
তার গৃহীত নীতি ঘাটতি পূরণ করে এবং দেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির দিকে ফেরে, তবে লক্ষ লক্ষ মানুষের দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহ করতে নাভিশ্বাস ওঠে।
শনিবারের ভোটে তৃতীয় স্থান অর্জন করার পর এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, এই দেশের অন্যতম অন্ধকার সময়কালে দেশকে স্থিতিশীল করতে আমি আমার সর্বোচ্চটা করেছি।”
অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী দীনেশ গুণবর্ধন পদত্যাগ করে দিসানায়াকার নিজস্ব মন্ত্রিসভা নিয়োগ করার পথ প্রশস্ত করে দেন।
দিসানায়াকার দল বলেছে, চলতি বছরের শেষের দিকে নতুন সংসদ নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি নিজস্ব মন্ত্রিসভা রাখতে চান। তার জেভিপি দলের ২২৫ সদস্যের সংসদে মাত্র তিনজন সদস্য রয়েছে।