শুক্রবার পাকিস্তানের উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত অঞ্চলের নিরাপত্তা ফাঁড়িতে জঙ্গি হামলার ফলে কমপক্ষে ছয়জন সৈন্য নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছে। এ হামলার সময় পাল্টা গুলিতে ১২ জন হামলাকারী নিহত হয়েছে।
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান এবং প্রতিবেশী উত্তর ওয়াজিরিস্তানে জঙ্গিবাদে বিধ্বস্ত জেলাগুলিতে ভোরবেলা এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে অন্তত চারজন সেনা রয়েছে যাদেরকে "গুরুতরভাবে আহত" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
একাধিক স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভিওএ-কে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন, তাদের গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার অনুমতি নেই।
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সংবাদমাধ্যম পরবর্তীতে জঙ্গি ও সৈন্য উভয়ের প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তবে এ দুই হামলার সময় সৈন্যদের আহত হওয়ার কোনো কথা উল্লেখ করেনি।
বিবৃতিটিতে বলা হয় জঙ্গিদের একটি দল দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে একটি নিরাপত্তা ফাঁড়িতে হামলা চালায়। ফলে, উভয় পক্ষের মধ্যে "তীব্র গুলি বিনিময়" শুরু হয় এবং ছয়জন সৈন্য এবং পাঁচজন হামলাকারী নিহত হয়।
সামরিক বাহিনী জানায়, উত্তর ওয়াজিরিস্তানের আফগান দিক থেকে সীমান্তে "অনুপ্রবেশ" করার চেষ্টা করার সময় সাতজন জঙ্গি নিহত হয়েছে। তারা পাকিস্তানি সীমান্ত সেনাদের দ্বারা "পরিবেষ্টিত" এবং আক্রমণের সম্মুখীন হয়।
বিবৃতিটিতে বলা হয়, "এছাড়াও, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে।"
নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান, বা টিটিপির সাথে জড়িত জঙ্গিরা এই মারাত্মক সহিংসতার দায় স্বীকার করেছে বলে জানা গিয়েছে।
টিটিপি নিয়মিতভাবে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের আশেপাশের জেলাগুলি এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী এবং সরকারি স্থাপনায় হামলা চালানোর কৃতিত্ব দাবি করে।
কর্মকর্তারা শুধুমাত্র এই বছরে এই প্রদেশটিতে এবং পাকিস্তানের অন্যান্য জায়গায় টিটিপি-র নেতৃত্বে বিভিন্ন সহিংসতায় শত শত সৈন্য, পুলিশ কর্মকর্তা এবং বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। প্রাদেশিক সন্ত্রাস দমন বিভাগের সর্বশেষ প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের প্রথম নয় মাসে আরও কয়েক শতাধিক আহত ব্যক্তি সহ কমপক্ষে ১০০ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সমান সংখ্যক বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু নথিভুক্ত করা হয়েছে।
জাতিসংঘ টিটিপিকে একটি বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করেছে। পাকিস্তান সরকারের মতে টিটিপি প্রতিবেশী দেশের উগ্র তালিবান নেতাদের সহায়তায় তাদের আফগানিস্তানের আশ্রয়স্থল থেকে হামলা পরিচালনা করছে।
তালিবান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও দেশ দ্বারা স্বীকৃত নয়। তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে যে, আফগানিস্তানের ভূমি থেকে টিটিপি বা অন্য কোনো বিদেশী গোষ্ঠী কাজ করছে বা প্রতিবেশী দেশগুলিকে সেখান থেকে হুমকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।