লেবাননে তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর যুদ্ধবিমান। (ফাইল ফটো)

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার রাতে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে তীব্রতম হামলা চালিয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে চলা যুদ্ধে এটাই তাদের সবচেয়ে জোরালো আঘাত। শান্ত ও সংযত থাকার আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ও অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, এই অভিযানে তাদের বিমান দক্ষিণ লেবাননে প্রায় ১০০টি বহুমুখী রকেট লঞ্চারে আঘাত হেনেছে। এগুলি তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করার জন্য প্রস্তুত ছিল।

তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনও খবর নেই। লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা এনএনএ-র বক্তব্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত ৯টার পর লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ৫২টির বেশি হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েল ও হেজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারিন জঁ-পিয়ের সংবাদদাতাদের বলেছেন, “সম্ভাব্য উত্তেজনা বৃদ্ধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত।”

হেজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বৃহস্পতিবার স্বীকার করেছেন যে, লেবাননে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগাযোগ ডিভাইসে প্রাণঘাতি বিস্ফোরক হামলা একটা “গুরুতর ধাক্কা।” এর প্রতিবাদে তিনি বলেছেন, এই অভিযান চালিয়ে ইসরায়েল সীমা অতিক্রম করেছে।

এই হামলায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত ও আরও প্রায় ৩ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। সন্দেহভাজন হেজবুল্লাহ জঙ্গি ও অন্যান্যরা তাদের পেজার-বার্তার উত্তর দিয়েছিল ও ওয়াকি-টকিতে বার্তালাপ চালানোর চেষ্টা করেছিল। তাদের হাতেই এই ডিভাইসগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটে।

মঙ্গলবার ও বুধবারের এই হামলা ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ চালিয়েছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। যদিও এর দায় ইসরায়েল স্বীকার বা প্রত্যাখ্যান করেনি।

নাসরাল্লাহ যথারীতি অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও মারফত বক্তব্য রেখেছেন। ইরান-সমর্থিত হেজবুল্লাহ সাধারণত বড় পর্দায় নাসরাল্লাহর ভাষণ দেখা ও শোনার জন্য সমর্থকদের নিয়ে সভার আয়োজন করে থাকে, তবে এবারে তা করা হয়নি।

হামলার ফলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির কারণে বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পেজার বা ওয়াকি-টকি বহনকারী যাত্রীদের বিমানে উঠতে দেয়নি লেবানন। এই নিষেধাজ্ঞা চেকড ও ক্যারি-অন লাগেজ ও পণ্যসম্ভারের ক্ষেত্রেও আরোপিত হয়েছে।