রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি, সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষ-ভাঙচুর

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন।

খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। রাঙামাটিতে মারা গেছেন ১ জন।

সংঘর্ষে নিহতদের মরদেহ খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে রয়েছে। আহত ৯ জনের মধ্যে ৪ জনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা খাগড়াছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়িতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের নারান খখিয়া ও স্বর্ণনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।

তবে কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। পরে রাতেই ১২ জনকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা। তিনি জানান, গুরুতর আহত চারজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।

জানা গেছে, জুনান চাকমা ও রুবেল খাগড়াছড়ি সদর এবং ধনঞ্জয় চাকমার বাড়ি দীঘিনালা থেকে এসছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই পক্ষের বিরোধের জের ধরে দীঘিনালার লারমা স্কয়ার মার্কেটে আগুন ধরিয়ে বিক্ষুদ্ধরা। এতে ৫০টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচজন।

ওদিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে পাহাড়ি ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপায় এসে তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে হামলা চালায়। খবর পেয়ে বাঙালিরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় আহত হয় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন। সংঘর্ষের সময় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির যৌথ টহল টিম কাজ করছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ায় এক বাড়িতে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মো. মামুন নামের যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মামুনের স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ডের জন্য পানখাইয়া পাড়াবাসীকে দায়ী করেছেন।

এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

তিন পার্বত্য জেলায় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের

বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি ও শুক্রবার রাঙামাটিতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে কাজ করছে উল্লেখ করে সবাইকে শান্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পরিদর্শন করবেন।

প্রতিনিধি দলে থাকছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।