সিরিয়ায় ইয়াজিদি নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতনের দায়ে সুইডেনে এক নারীর বিচার শুরু

সিরিয়ার ডেরিকের নওরোজ শিবিরে মানবিক সহায়তার জন্য ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের বাস্তুচ্যুত সদস্যরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ফাইল ফটোঃ ১২ আগস্ট, ২০২৪।

বৃহস্পতিবার সুইডিশ কর্তৃপক্ষ ইসলামিক স্টেট গ্রুপের সাথে যুক্ত ৫২ বছর বয়সী একজন নারীর বিরুদ্ধে সিরিয়ায় গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ইয়াজিদি নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগ এনেছে। স্ক্যানডিনেভিয়ান দেশটিতে এ ধরনের ঘটনায় এটিই প্রথম বিচারের নজির স্থাপন করলো।

সুইডেনের নাগরিক লিনা লাইনা ইসহাক ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বঘোষিত আইএস খিলাফতের সাবেক কার্যকর রাজধানী এবং প্রায় তিন লাখ মানুষের আবাসস্থল রাক্কায় এই অপরাধ চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সিনিয়র প্রসিকিউটর রীনা দেবগুন এক বিবৃতিতে বলেন, "রাক্কায় আইএস শাসনের অধীনে এই অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। এই প্রথমবারের মতো সুইডেনে ইয়াজিদি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আইএস হামলার বিচার করা হচ্ছে।"

সিনিয়র প্রসিকিউটর রীনা দেবগুন। ফটোঃ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

পৃথক এক বিবৃতিতে স্টকহোম ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট বলেছে, প্রসিকিউটর দাবি করেছেন, ওই নারী রাক্কায় তার বাসভবনে ইয়াজিদি নৃগোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন নারী ও শিশুকে আটক করেন এবং “অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি তাদের সাংস্কৃতিক,মৌলিক, ধর্ম ও লিঙ্গ বিষয়ক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে নিপীড়নের পথ সুগম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যা সাধারণ আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।”

অভিযোগ অনুসারে, এর লক্ষ্য ছিল, “ইয়াজিদি জাতিগত গোষ্ঠীটিকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে নির্মূল করা”। তারা “সশস্ত্র সংঘাতের অংশ বা অন্য কোনোভাবে তার সাথে সম্পর্কিত ছিল।”

আইএস জঙ্গিরা ২০১৪ সালে ইরাকের সিনজার অঞ্চলের ইয়াজিদি শহর ও গ্রামে হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুদের অপহরণ করে। নারীদের যৌন দাসত্বে বাধ্য করা হতো এবং ছেলেদের জিহাদি মতাদর্শে দীক্ষিত করা হতো।

দুই বছর বয়সী ছেলেকে ২০১৪ সালে সিরিয়ায় নিয়ে যাওয়ার দায়ে ওই নারীকে সুইডেনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। সিরিয়ার ওই এলাকা তখন আইএস নিয়ন্ত্রিত ছিল।