খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়া সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ৭টা ৫ মিনিটের দিকে বাসায় পৌঁছান।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে (খালেদা জিয়া) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাসপাতালে অবস্থানকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। বোর্ড তাঁর স্বাস্থ্য ও সর্বশেষ মেডিকেল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে এখন তাঁর চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসা দেওয়া হবে।

এক সপ্তাহ আগে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২১ অগাস্ট সন্ধ্যায় গুলশানের বাসায় ফিরেছিলেন তিনি।

২৩ জুন অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার বুকে সফলভাবে পেসমেকার স্থাপন করেন।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।

২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ তাঁর সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁর সাজা হয়।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাজা স্থগিত করে ৭৭৬ দিন পর খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি দিয়ে তাঁর গুলশানের বাসায় থাকার অনুমতি দেয়। এসময় তিনি দেশত্যাগ করতে পারবেন না বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়।

এ বছরের ৫ অগাস্ট ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়া পুরোপুরি মুক্তি পান।

৬ অগাস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক গেজেটে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি এ আদেশ দিয়েছেন।

সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যেকোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও স্থগিত মঞ্জুর করার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।”