অন্তবর্তী সরকার দেশের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা স্থগিত করেছে, জানালেন উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এ তথ্য জানান।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখছি। এই মুহূর্তে এটি আমাদের ফোকাস নয়।”

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ও অর্থায়নের নতুন দিকনির্দেশনা খুঁজতে একটি সরকারি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। “তিন মাসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন।”

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, তবে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করবে না সরকার। “আমাদের এর জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই। আমরা দ্রুতগতিতে নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করছি।”

তিনি বলেন, দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মতো মানবসম্পদ বিভাগে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। “আমাদের এসব ক্ষেত্রে দ্রুত নতুন উদ্যোগ নিতে হবে।”

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা স্থগিতের বিষয়টি বড় কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত কি না জানতে চাইলে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “এই পরিকল্পনার সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রণীত জাতীয় বাজেটের কোনো মিল নেই।”

নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার তাদের পছন্দ অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে।

তিনি বলেন, “আমরা বড় কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেব না। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা একটি রাজনৈতিক দলিল যা রাজনৈতিক নির্দেশনা ও দর্শনকে অন্তর্ভুক্ত করে।”

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদকাল ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় এটি অনুমোদিত হয়।

পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা একটি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো পাঁচ বছরের জন্য তৈরি করা হয়। তাই এই পরিকল্পনাকে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি ভবিষ্যত অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডের সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে। এ পরিকল্পনার অধীনে স্বল্পমেয়াদি বার্ষিক পরিকল্পনা গৃহীত হয়।

১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৮টি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে।