ইরানে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে নোবেল বিজয়ী নার্গেস মোহাম্মদীর আহ্বান

ইরানি মানবাধিকার কর্মী নার্গেস মোহাম্মদীকে তেহরানে নারী অধিকার বিষয়ক এক সভায় দেখা যাচ্ছে। ২৭ আগস্ট ২০০৭। ফাইল ছবি।

ইরানে নারী নিপীড়ন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী নার্গেস মোহাম্মদী।

তিনি বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্বের জনগণের প্রতি সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।” শনিবার তেহরানের এভিন কারাগারে লেখা এবং সোমবার তার ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত একটি চিঠিতে তিনি এ কথা বলেন।

২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনি নামে ২২ বছর বয়সী ইরানি কুর্দি তরুণী পুলিশ হেফাজতে নারী হয়ে দেশটির কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর “নারী, জীবন, স্বাধীনতা” বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।

ইরানে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা এবং মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো মোহাম্মদী ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে তেহরানের এভিন কারাগারে রয়েছেন।

গত এক দশকের বেশির ভাগ সময় তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন।

ইরানের নিপীড়নমূলক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভ আন্দোলনের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে রবিবার ২৪ ঘন্টার প্রতীকী অনশন ধর্মঘট পালনকারী ৩৪ জন নারীর তিনি একজন।

২০২৩ সালে কারাগারে থাকা অবস্থায় মোহাম্মদীর সন্তানরা তার পক্ষে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেছিল।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরানে নারীদের জনসম্মুখে চুল ও ঘাড় ঢেকে রাখতে হয়।

“নারী, জীবন, স্বাধীনতা” আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্তৃপক্ষ দমন করেছে। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী এই অভিযানে অ্যাসল্ট রাইফেল ও শটগান ব্যবহার করেছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, অন্তত ৫৫১ জন নিহত হয়েছেন। আরও কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

কিন্তু মোহাম্মদী ছিলেন নাছোড়বান্দা।

তিনি বলেন, “মানুষ তাদের বিশ্বাস, জীবন ও সমাজে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন অনুভব করে। এমন একটি পরিবর্তন যা এখনো ইসলামিক প্রজাতন্ত্র শাসনের পতন ঘটাতে না পারলেও ধর্মীয় স্বৈরশাসনের ভিত্তিকে নাড়িয়ে দিয়েছে।”