পাকিস্তানে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হাজার হাজার সমর্থক রবিবার ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে তার ‘অবৈধ’ কারাদণ্ডের নিন্দা জানাতে এবং তার তাৎক্ষণিক মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে।
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই এই জনসমাবেশের আয়োজন করে, যা পাকিস্তানের রাজধানীর ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম জনসভা।
অন্যান্য শহর থেকে গাড়ির বহরে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছাতে বাধা দেয়ার জন্য পুলিশ শিপিং কনটেইনারসহ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত রুটটি অবরুদ্ধ করা সত্ত্বেও ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। সম্ভাব্য অশান্তি ঠেকাতে প্রশাসন দাঙ্গা পুলিশও মোতায়েন করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, পাকিস্তানের অন্যান্য স্থান থেকে পিটিআই কর্মী ও নেতারা ইসলামাবাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। পিটিআই কর্মীদের বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ থেকে সফলভাবে কনটেইনার সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।
সমাবেশে যাওয়ার পথে পুলিশ পিটিআই কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। পরে কর্তৃপক্ষ খান সমর্থকদের পাথর ছোঁড়ার কারণে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হওয়ার কথা জানায়। দলের নেতারা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।
ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউটের মাইকেল কুগেলম্যান এক্স-এ বলেন, “সড়ক অবরোধ ও কন্টেইনারের মাধ্যমে সংখ্যা সীমিত করার রাষ্ট্রের কৌশল এবং সহিংস দমনপীড়ন ও গ্রেপ্তারের ঝুঁকি সত্ত্বেও পিটিআই-এর সমাবেশে জোরালো উপস্থিতি ছিল।”
কুগেলম্যান লিখেছেন, “এর আকার এবং জনপ্রিয়তা নিশ্চিত করে যে, একে রোধ করার নিরলস চেষ্টার পরেও এর সমাবেশ করার ক্ষমতা অক্ষত রয়েছে।”
রবিবার তার কারাবন্দী হওয়ার ৪০০ দিন পূর্ণ হলো। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, সেনাবিরোধী সহিংস বিক্ষোভে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি সমস্ত অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন, তার ক্ষমতায় ফিরে আসা রোধ করার জন্য শক্তিশালী পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এর পেছনে রয়েছে।
পরবর্তীতে আপিল আদালত প্রমাণের অভাবে তার বিরুদ্ধে আসা সকল অভিযোগ বাতিল বা স্থগিত করেছে। তবে কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগার থেকে বের হতে বাধা দেয়ার জন্য নতুন অভিযোগ দায়ের করে। জুলাই মাসে জাতিসংঘ ইমরান খানের আটককে অবৈধ ঘোষণা করে বলেছিল, তাকে কারাগারে রাখার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।