ভিয়েতনামের সরকারি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার বন্যার জলের তোড়ে একটি সেতু ভেঙ্গে পড়েছে এবং একটি বাস ভেসে গেছে। সে দেশে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের পর বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে কমপক্ষে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রপ্তানি-নির্ভর উত্তরাঞ্চলের শিল্প কেন্দ্রগুলিতে ব্যবসা ও কলকারখানার কাজ ব্যাহত হয়েছে।
সরকারি সংবাদ মাধ্যম ভিএন এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির কারণে শনিবার ভিয়েতনামে ভূমিধস হয়েছে যার ফলে ৯ জন মারা গেছে এবং ঘূর্ণিঝড়ের পর বন্যা ও ভূমিধসের ফলে কমপক্ষে ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে বেশ কয়েকটি নদীর জলস্তর বিপজ্জনক রকম উঁচুতে।
সোমবার সকালে চাও ব্যাং-এর পার্বত্য প্রদেশে ভূমিধসের ফলে ২০ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস নদীতে ভেসে গেছে। উদ্ধারকারীদের মোতায়েন করা হয়েছিল, তবে ভূমিধস তাদের পথ রোধ করেছে।
ফু থো প্রদেশে সোমবার সকালে উপচানো রেড নদীর উপর একটি স্টিলের সেতু ভেঙ্গে পড়ার পর উদ্ধার অভিযান অব্যাহত ছিল। একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০টি গাড়ি ও ট্রাক-সহ দুটি মোটরবাইক নদীতে পড়ে গেছে। তিনজনকে নদী থেকে তোলা হয়েছে এবং তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তবে আরও ১৩ জন নিখোঁজ।
সরকারি মিডিয়া লাও ডং সংবাদপত্র জানিয়েছে, হাইফং প্রদেশে কয়েক ডজন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সোমবারের মধ্যে উৎপাদন শুরু করতে পারেনি কারণ কারখানাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। এর ফলে সোমবারেও হাইফং ও কোয়াং নিন প্রদেশে বিদ্যুৎ নেই। এই দুই প্রদেশ শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এখানে অনেক কারখানা রয়েছে যেগুলি পণ্য রপ্তানি করে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন রবিবার হাইফং সফর করেছেন এবং এই বন্দর শহর পুনরুদ্ধারে সাহায্যের জন্য তিনি ৪০ লক্ষ ৬২ হাজার ডলারের প্যাকেজ অনুমোদন করেছেন।
ভিয়েতনামে কয়েক দশকে যতগুলি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে সেগুলির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াগি সবচেয়ে শক্তিশালী। এই ঝড়ের ফলে শনিবারেও ভূমিধস হয়েছে। ইয়াগির গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১৪৯ কিলোমিটার। রবিবার এই ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে পড়ে, তবে সে দেশের আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করেছে, মুষলধারায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার ফলে বন্যা ও ভূমিধস ঘটতে পারে।
ভিয়েতনামে আঘাত হানার আগে গত সপ্তাহে ইয়াগির তাণ্ডবে ফিলিপাইনসে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং চীনের দক্ষিণাঞ্চলে চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে।