টাইফুন ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামে ১৪ জনের প্রাণহানি, বন্যার আশংকা

ভিয়েতনামের কুয়াং নিন প্রদেশে সুপার টাইফুন ইয়াগি আঘাত হানার পর এক ব্যক্তি তার নৌকার ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করছেন (৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রবিবার ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, টাইফুন ইয়াগি দেশটির উত্তরে প্রবল বেগে আঘাত হানার পর অন্তত ১৪ জনের প্রাণহানি এবং আরও ১৭৬ জন আহত হয়েছেন। এই ঝড় দুর্বল হতে শুরু করলেও ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্ক বার্তা দিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ভিয়েতনামের কর্মকর্তারা এই ঝড়কে গত এক দশকে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুনের অন্যতম হিসেবে অভিহিত করেছেন। ইয়াগির প্রভাবে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলের ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন অবস্থায় থাকতে বাধ্য হচ্ছে। এটি একইসঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত এক লাখ ১৬ হাজার ১৯২ হেক্টর কৃষি জমির ক্ষতি করেছে, যা সাধারণত ধান ও ফলের চাষে ব্যবহার করা হয়। চারটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ এবং শত শত ফ্লাইট বাতিল হয়।

শনিবার বিকেলে এই টাইফুন ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলের উপকূলীয় প্রদেশ কুয়াং নিন ও হাইফংয়ে ঘণ্টায় ১৪৯ কিলোমিটার গতিবেগে আঘাত হানে। প্রায় ১৫ ঘণ্টা তাণ্ডব চালানোর পর এটি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে রবিবার ভোরে ট্রপিকাল ডিপ্রেশনে পরিণত হয়। তা সত্ত্বেও, ভিয়েতনামের আবহাওয়া বিভাগ উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের প্রদেশগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে এবং নিমাঞ্চলগুলোতে বন্যা, আকস্মিক বন্যা ও খাড়া ঢালের কাছে ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছে।

রাজধানী হ্যানয়ে মিউনিসিপাল কর্মী, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তারা উপড়ে পড়া গাছ, পড়ে যাওয়া বিলবোর্ড, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ঝোড়ো বাতাসে উড়ে যাওয়া বাড়ির ছাদগুলো পরিষ্কার করছেন এবং ভবনগুলোর ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা হিসাব করছেন।

সিঙ্গাপুরের আর্থ অবজারভেটরির পরিচালক বেঞ্জামিন হরটন বলেন, “টাইফুন ইয়াগির মতো ঝড়গুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগের তুলনায় আরও বেশি শক্তিশালী হচ্ছে। এর প্রাথমিক কারণ, অপেক্ষাকৃত উষ্ণ সমুদ্রের পানি ঝড়গুলোকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলছে, যার ফলে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে এবং আরও ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।”