পশ্চিম তীর-জর্ডান সীমান্তে বন্দুক হামলায় তিন ইসরায়েলি নিহত

অধিকৃত পশ্চিম তীর ও জর্ডান সীমান্তে হামলার সংবাদ পেয়ে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিচ্ছেন। (৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪)

রবিবার পশ্চিম তীর ও জর্ডানের সীমান্ত ক্রসিংয়ে তিন ইসরায়েলি গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, এই হামলার সঙ্গে গাজার ১১ মাসব্যাপী যুদ্ধের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে মনে হয়।

সামরিক বাহিনী বলছে, বন্দুকধারী ব্যক্তি ট্রাকে করে জর্ডান থেকে অ্যালেনবি সেতু ক্রসিং দিয়ে এগিয়ে আসার সময় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করলে পাল্টা গুলিতে তাকে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা। সেনাবাহিনী বলছে, এ সময় তিনজন বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন। ইসরায়েলের ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম রেসকিউ সার্ভিস বলছে নিহতরা সবাই পুরুষ এবং তাদের বয়স পঞ্চাশের কোঠায়।

জর্ডানের পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত পেত্রা নিউজ এজেন্সি। পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যতম মিত্র এই আরব দেশটি ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেও তারা ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে ইসরায়েলি নীতির কড়া সমালোচনা করে থাকে। জর্ডানে অসংখ্য ফিলিস্তিনি বসবাস করেন। দেশটিতে গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং এই ঘটনাকে ইরান ও তাদের মিত্র সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর সংঘাতের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ ধরনের সংগঠনের মধ্যে আছে গাজার হামাস ও লেবাননের হেজবোল্লাহ।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের অতর্কিত হামলায় গাজায় যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। সে সময় থেকেই ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। জনবহুল ফিলিস্তিনি আবাসিক এলাকাগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই সামরিক অভিযান ও ধরপাকড় চালিয়ে গেছে ইসরায়েল। সঙ্গে অবৈধ অধিগ্রহণকারীদের (সেটলার) পক্ষ থেকে সহিংসতা ও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের হামলাও বেড়েছে।

১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে ইসরায়েল পশ্চিম তীর, গাজা ও জেরুজালেম অধিগ্রহণ করে। এই অঞ্চলগুলোকে নিয়েই ভবিষ্যতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে চায় ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল ২০০৫ সালে গাজা থেকে সেনা ও সেটলারদের সরিয়ে নিলেও এ অঞ্চলের আকাশসীমা, উপকূলরেখা ও বেশিরভাগ স্থল সীমান্তের দখল তারা ধরে রেখেছে। ২০০৭ সালে প্রতিদ্বন্দ্বী ফিলিস্তিনি বাহিনীর কাছ থেকে হামাস ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার পর মিসরের পাশাপাশি ইসরায়েলও গাজার বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।