ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি শুক্রবার জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও ৫০টির বেশি অংশীদার দেশের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মূলত আরও অস্ত্র সরবরাহে চাপ দিতেই এই সাক্ষাৎ। এরই মধ্যে ওয়াশিংটন ঘোষণা করেছে, তারা কিয়েভকে নিরাপত্তা সহায়তা খাতে আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের এক বিশেষ গতিশীল মুহূর্তে নেতাদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডনবাসে প্রধান এক কেন্দ্রের কাছে রুশ বাহিনীর মারাত্মক হুমকির মুখে ইউক্রেন তাদের প্রথম সামরিক অভিযান চালাচ্ছে।
এ পর্যন্ত রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের অভ্যন্তরে অতর্কিত হামলার পরেও প্রেসিডেন্ট পুতিনের নজর ইউক্রেনের পকরোভস্ক শহর থেকে সরেনি। কেননা এই শহর দিয়ে প্রসারিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ ও সরবরাহ যোগসূত্র যা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জন্য ভীষণ জরুরি। পকরোভস্ক হারিয়ে ফেললে ইউক্রেনের বাকি শহরগুলি ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
কুরস্কের উপর হামলার ফলে রাশিয়া বাড়তি সতর্ক ও রক্ষণাত্মক হয়ে উঠেছে। এদিকে, ইউক্রেন ডিফেন্স কনট্যাক্ট গ্রুপের বৈঠকের আগে সংবাদমাধ্যমে অস্টিন সতর্ক করেছেন, “আমরা জানি পুতিনের বিদ্বেষ অনেক গভীরে প্রসারিত।” তিনি আরও বলেন, মস্কো বিশেষ করে পকরোভস্ক অঞ্চলের আশেপাশে চাপ তৈরি করছে।
সম্প্রতি রাশিয়া ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে। এর ফলে জেলেন্সকি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পুনরায় আবেদন জানিয়েছেন যাতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর ব্যাপারে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। তবে, ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবারের বৈঠকে নজর থাকবে বিমান প্রতিরক্ষা ও কামান সরবরাহ আরও বাড়ানো এবং ইউক্রেনকে আরও মজবুত ভিতের উপর দাঁড় করাতে সে দেশের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্প ঘাঁটিকে সম্প্রসারিত করা কেননা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে জো বাইডেনের মেয়াদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
জেলেন্সকি বলেছেন, দূরপাল্লার হামলা চালাতে সক্ষম অস্ত্রের জন্য তিনি চাপ অব্যাহত রাখবেন। তিনি বার্তাবাহী অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেছেন, “আমাদের কাঙ্ক্ষিত শান্তি ফিরিয়ে আনতে মিত্রদের কাছ থেকে মজবুত দূরপাল্লার অস্ত্র প্রয়োজন।
অস্টিন বলেছেন, সোভিয়েত যুগের এস-৩০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিকল্প ক্ষেপণাস্ত্র দিতে ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করছে পশ্চিমা অংশীদার দেশগুলি।
২০২২ সাল থেকে সদস্য দেশগুলি সম্মিলিতিভাবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সহায়তা খাতে প্রায় ১০৬ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মোট অনুদানের মধ্যে ৫৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি দিয়েছে।
জার্মান সরকার জানিয়েছে, চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ শুক্রবার বিকালে ফ্রাঙ্কফুর্টে জেলেন্সকির সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করেছেন।