ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করার অঙ্গীকার করেছেন। তার বক্তব্য আসে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় ছয়জন জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করার পর। ধারনা করা হচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনী যখন গাজায় জিম্মিদের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, তখন ছয়জনকেই হামাস জঙ্গিরা গুলি করে হত্যা করে।
“যারা জিম্মিদের হত্যা করে তারা (গাজায় যুদ্ধ বিরতির জন্য) কোন চুক্তি চায় না,” নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন। তিনি হামাস নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা তোমাদের খুঁজে বের করবো, আমরা তোমাদের ধরবো এবং আমরা বদলা নেব।”
একজন সামরিক মুখপাত্র, রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হেগারি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, আমরা তাদের কাছে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে, হামাস সন্ত্রাসীরা তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করে।” তাদেরকে রাফাহ শহরে একটি সুরঙ্গের ভেতরে পাওয়া যায়।
সন্ধ্যার মধ্যে, শোকার্ত এবং ক্ষুব্ধ ইসরায়েলিরা রাস্তায় বেরিয়ে “এখনই!” “এখনই!” স্লোগান দিতে থাকে। তাদের দাবী হচ্ছে, নেতানিয়াহু যেন হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনে এবং গাজায় প্রায় ১১ মাস ধরে চলা যুদ্ধ থামায়।
ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন হিস্তাদ্রুত সরকারের উপর অর্থনীতিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য সোমবার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে, ধর্মঘটের ফলে ব্যাংকিং, স্বাস্থ্য সেবা এবং বিমান চলাচল সহ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতে কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি পুলিশ নিহত
রবিবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেবরন শহরে এক গুলি বর্ষণের ঘটনায় তিনজন ইসরায়েলি পুলিশের মৃত্যুর জন্য নেতানিয়াহু হামাসকে দায়ী করেন। হামাস এই ঘটনার জন্য দায়িত্ব দাবী করেনি, কিন্তু তারা এই আক্রমণকে “প্রতিরোধ বাহিনী পরিচালিত এক বীরত্বপূর্ণ অপারেশন” বলে অভিহিত করে।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা সকল রণাঙ্গনে একটি নিষ্ঠুর শত্রুর সাথে লড়াই করছি, যারা আমাদের সবাইকে হত্যা করতে চায়। হামাস যে ৭ অক্টোবরের মত হত্যাযজ্ঞ ঘটাতে পারে, এই কোথাই আমাদের বুঝিয়ে দেয় যে, তারা যাতে এটা ভবিষ্যতে আর করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে আমাদের যা করা দরকার, তা করতে হবে।
হামাসের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি জঙ্গিরা গত বছর ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে সামরিক ঘাঁটি এবং কয়েকটি বসতিতে হামলা চালিয়ে প্রায় ১,২০০ মানুষ হত্যা করে এবং ২৫০জন কে জিম্মি করে কইয়ে যায়।
ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় গাজায় ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, জায়ের বেশির ভাগ নারী ও শিশু বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গাজার ২৩ লক্ষ বাসিন্দার বেশির ভাগ কয়েক দফায় বাস্তচ্যুত হয়েছেন এবং এই অবরুদ্ধ ভূখন এখন মানবিক বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে।