পাকিস্তানের প্রশাসন সোমবার জানিয়েছে, সে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিকভাবে অস্থির প্রদেশ বালুচিস্তানে রাতে পৃথক পৃথক হামলায় ৪০-এর বেশি লোককে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, রবিবার গভীর রাতের দিকে এই সহিংসতা শুরু হয়। সশস্ত্র বিদ্রোহীরা মুসাখাইল জেলায় আন্তঃপ্রাদেশিক মহাসড়ক অবরোধ করে। একাধিক বাস ও ট্রাক থেকে অন্তত ২৩ জন যাত্রীকে জোর করে বের করে এনে হত্যা করা হয়।
এই এলাকার এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা আয়ুব আশাকজাই সংবাদদাতাদের বলেছেন, নিহতদের অধিকাংশই পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবের বাসিন্দা। তিনি আরও বলেন, হত্যা করার আগে হামলাকারীরা যাত্রীদের পরিচয় যাচাই করেছিল। পালানোর আগে তারা গাড়িগুলিতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
কর্তৃপক্ষ পৃথকভাবে জানিয়েছে, রবিবার রাতে জনবিরল এই প্রদেশে বিদ্রোহীরা পুলিশের উপর ‘হিট-অ্যান্ড-রান’ হানা চালিয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষেও লিপ্ত হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সহিংসতায় অন্তত চারজন নিরাপত্তা কর্মী, একজন সরকারপন্থী বৃদ্ধ আদিবাসী ও দুইজন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন।
এই নৈশ সহিংসতার দায় নিয়েছে বেআইনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মি বা বিএলএ। তাদের দাবি, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর হয়ে যারা কাজ করেন তাদেরকে নিশানা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দফতর বলেছে, যাত্রীবাহী গাড়ি ও বালুচিস্তানের একাধিক জেলায় রবিবারের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করেছেন তিনি।
পাকিস্তানের সরকারি রেডিও সোমবার জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের নৈশ হামলাকে “কার্যকরীভাবে” মোকাবিলা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী এবং “১২ জন সন্ত্রাসীকে” হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে তারা বিস্তারিত জানায়নি। স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সূত্র থেকে সরকারি দাবি যাচাই করা যায়নি।
বিএলএ তাদের বিবৃতিতে দাবি করেছে, তাদের সর্বশেষ হামলা বালুচিস্তানে শুরু করা নতুন অভিযানের অংশ। পাশাপাশি, এই প্রদেশের বাসিন্দাদের “মহাসড়ক থেকে দূরে থাকতে এবং বালুচ যোদ্ধাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে” হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্র বিএলএ-কে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়ের দাবি তুলে বিএলএ ও অন্যান্য কয়েকটি নিষিদ্ধ বালুচ জনজাতি গোষ্ঠী বালুচিস্তানে প্রায়শই ও ধারাবাহিকভাবে হামলা চালায়।