হত্যা ও বিস্ফোরণসহ পাঁচটি অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এ ছাড়া, মামলায় সাবেক সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, নরসিংদী সদরের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ডিবি প্রধান হারুন অর-রশিদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান, আওয়ামী লীগের জেলা শাখার সভাপতি জি এম তালেব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীসহ ৮১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ অগাস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার বাদুয়ারচর এলাকার মৃত আবু সিদ্দীক মিয়ার ছেলে আলমাছ মিয়া নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট আদালতে হত্যা-বিস্ফোরণসহ কয়েকটি অভিযোগ এনে মামলাটি করেন।
বিষয়টি আমলে নিয়ে সদর থানায় মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেন নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক নাহিদ মিয়াজী।
এই মামলায় নরসিংদী জেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধি রয়েছেন।
নরসিংদীর আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বাদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত সদর থানাকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, র্যাব ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন
২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দফতর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়।
ওই কর্মকর্তারা হলেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খান। তাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত।
বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছেন বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।