খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

প্রায় দেড় মাস রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বুধবার (২১ অগাস্ট) সন্ধ্যায় বাসায় ফিরেছেন।

সন্ধ্যা ৬টার পর হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন তিনি।

চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

খালেদা জিয়াকে সর্বশেষ ৮ জুলাই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর ছয় দিন আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন তিনি।

এর আগে ২৩ জুন অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার বুকে সফলভাবে পেসমেকার স্থাপন করেন।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।

২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তাঁকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকেরা।

২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ তাঁর সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁর সাজা হয়।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাজা স্থগিত করে ৭৭৬ দিন পর খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি দিয়ে তাঁর গুলশানের বাসায় থাকার অনুমতি দেয়। এসময় তিনি দেশত্যাগ করতে পারবেন না বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়।

৫ অগাস্ট ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়া পুরোপুরি মুক্তি পান।

৬ অগাস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক গেজেটে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি এ আদেশ দিয়েছেন।

সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যেকোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও স্থগিত মঞ্জুর করার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।"