ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি সোমবার বলছেন, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে প্রায় দুই সপ্তাহের অভিযানে লক্ষ্য পূরণ করছে তার দেশ। ঠিক সীমান্তের ওপারে ইউক্রেনের দিকে যাতে রাশিয়া আর সেনা পাঠাতে বা হামলা চালাতে না পারে, সে লক্ষ্যে “বাফার জোন” তৈরির লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বলে জানান তিনি।
“আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করছি”, বলছেন জেলেন্সকি।
৬ আগস্ট এক অপ্রত্যাশিত হামলায় কিয়েভ সীমান্তের ওপারে সেনা পাঠায়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কোর পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরুর পর এটাই রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় হামলা।
ইউক্রেনের যোদ্ধারা দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে পেরে উঠতে না পারলেও, কিয়েভ বলছে, রুশ ভূখণ্ডে তাদের এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল মস্কোকে “ন্যায্য” শর্তে যুদ্ধাবসানের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা—সে আলোচনার সময় যখনই আসুক না কেন। ইউক্রেন বলছে, তারা কুরস্ক অঞ্চল থেকে সামরিক বাহিনীতে নিবন্ধনকৃত শত শত রুশ নাগরিককে আটক করেছে।
তবে পূর্ব ইউক্রেনে কিয়েভের সেনারা খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না।
ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ওলেকসান্দর সিরস্কি সোমবার জানান, পোকরোভস্ক এলাকায় “তুমুল যুদ্ধ” চলছে।
তিনি জানান, নিকটবর্তী শহর তোরেৎস্কও চাপের মুখে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই শহরের পতন হলে চাসিভ ইয়ার নামের শক্তিশালী সামরিক অবস্থানের দিকে রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রা ঠেকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওয়াশিংটনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার রবিবার বলছে, রুশ বাহিনী গত ছয় মাসে পোকরোভস্ক অঞ্চলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার করে এগিয়ে আসছে।
রুশ বাহিনীর এই অগ্রযাত্রার মাঝেও রবিবার জেলেন্সকি তার রাত্রিকালীন বক্তব্যে হামলাকারীদের ঠেকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনীর উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
“এক দিনের ব্যবধানে কয়েক ডজন হামলা হয়েছে, কিন্তু আমাদের ইউনিট, আমাদের ব্রিগেড তাদের নিজ নিজ অবস্থান ধরে রাখতে যা যা করা দরকার,তার সবই করছে”, বলেন তিনি।
জেলেন্সকি বলছেন, কিয়েভের সেনারা তোরেৎস্কের কাছে রুশ সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে।
ডনেটস্ক প্রদেশের অন্যতম শক্তিশালী ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র পোকরোভস্ক। এই শহরটি শত্রুর দখলে গেলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও সরবরাহ রুট বড় আকারে বিঘ্নিত হবে। যার ফলে সমগ্র ডনেটস্ক অঞ্চল দখলে নেওয়ার লক্ষ্যের আরও কাছে পৌঁছে যাবে রাশিয়া।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স, এএফপি ও এপি থেকে নেওয়া হয়েছে।