শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ও চারুকলা অনুষদের ডিনরা।
সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সময় "নিপীড়কদের পক্ষ নেওয়া" এবং নিজের দায়িত্ব পালনে "অযোগ্য" অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বশির পদত্যাগ করেন।
শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেন, অধ্যাপক আবদুল বশির রমজান মাসে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতে বাধা দিয়েছেন। তার পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীরা তার কার্যালয়ের জড়ো হয়ে পবিত্র কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করে এবং তার সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য দোয়া করে।
সেসময় অধ্যাপক বশির উপস্থিত ছিলেন।
এবছরের ১০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী।
পরে এ আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের ‘কেন শাস্তি প্রদান করা হবে না’— এই মর্মে বিভাগের চেয়ারম্যান বায়ের মুহাম্মদ এহসানুল হকের কাছে লিখিত বক্তব্য চান কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বশির।
নোটিশে বলা হয়, "কলা অনুষদ ও প্রক্টর অফিসের নিয়ম নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে আপনার বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘আরবি সাহিত্য পরিষদ’ গত ১০ মার্চ বিকেলে কলা ভবনের সামনের বটতলায় একটি কোরআন মাহফিলের আয়োজন করে। পূর্বানুমতি না নিয়ে এ ধরনের কাজের জন্য কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এ মর্মে আপনাকে লিখিত বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করছি।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বটতলায় কোনো সভা-সমাবেশ করতে হলে প্রক্টর অফিসে কিংবা কলা অনুষদের ডিন অফিসে অনুমতি নিতে হয়।
সোমবার (১৯ অগাস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে তার পদত্যাগের দাবিতে ডিন কার্যালয়ে যান।
পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিছার উদ্দিনও পদত্যাগ করেন।
সোমবার উপাচার্য বরাবর দেওয়া ওই চিঠিতে নিসার হোসেন বলেন, "...রবিবার আমার অনুপস্থিতিতে চারুকলার শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরকৃত একটি চিঠি আমার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠির চার দাবির মধ্যে একটিতে আমাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি গণহত্যা ও স্বৈরাচারিতার পক্ষে অবস্থান করায় আমাকে চারুকলা অনুষদের ডিন পদ থেকে পদতাগের দাবি করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ কতটুকু বস্তুনিষ্ঠ এবং পদত্যাগের দাবি কতটা যৌক্তিক তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে যাচাই সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমার পক্ষ থেকে আবেদন করার কোন সুযোগ বর্তমান পরিস্থিতিতে নেই বিধায় আমি উক্ত অভিযোগ আমলে না নিয়েও আমাকে ডিনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য অনুরোধ করছি।"
এসময় আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরার তাদের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রহমতউল্লাহর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে।
তার অনুপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা ডিন অফিস তালা মেরে সিলগালা করে দেয়।