তালিবান ১৪ লাখ আফগান কিশোরীকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ স্কুল বঞ্চিত করেছে

আফগানিস্তানের কাবুলে স্কুল বছরের প্রথম দিনে একজন শিক্ষক মেয়েদের একটি ক্লাসে পড়াচ্ছেন। ২৫ মার্চ, ২০২৩। ফাইল ছবি।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ বলেছে, আফগানিস্তানে তালিবান কর্তৃপক্ষ তিন বছর আগে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের পর থেকে ১৪ লাখ মেয়ে শিশুকে স্কুলে যাওয়া থেকে “ইচ্ছাকৃতভাবে বঞ্চিত” করেছে, যা পুরো একটি প্রজন্মের ভবিষ্যতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো নতুন এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এই সপ্তাহে দারিদ্র্যপীড়িত দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে তালিবান শাসনের তিন বছর পূর্ণ হলো।

২০২১ সালের আগস্টে তালিবান ক্ষমতায় ফিরে আসে এবং শিক্ষা ও জনজীবনে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে নারীদের ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করে। আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা ১২ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী মেয়েদের শিক্ষার সুযোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলে এক বিবৃতিতে বলেন, “ডি ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে ২০২১ সাল থেকে কমপক্ষে ১৪ লাখ বালিকা ইচ্ছাকৃতভাবে মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “এতে ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইউনেস্কো কর্তৃক পরিচালিত পূর্ববর্তী গণনার তুলনায় ৩ লাখ বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। কারণ প্রতি বছর ১২ বছর বয়সী বালিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।”

জাতিসংঘ ও বৈশ্বিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘লিঙ্গ বৈষম্যমূলক’ বলে নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।

তালিবান সরকার ইউনেস্কোর অনুসন্ধান এবং নারী শিক্ষার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া দেয়নি। তালিবান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দেশ দ্বারা স্বীকৃত নয়।

কট্টরপন্থী আফগান নেতারা বরাবরই তাদের নীতির সমালোচনা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের দাবি, তারা স্থানীয় সংস্কৃতি এবং শরিয়া বা ইসলামী আইনের কঠোর ব্যাখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালিবান শাসনের অধীনে ১১ লাখ আফগান বালক-বালিকা স্কুলে যেতে না পারায় প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগও ‘মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে’। এতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে আফগানিস্তানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ৫৭ লাখ বালক-বালিকার উপস্থিতি রয়েছে। ২০১৯ সালে এই উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ৬৮ লাখ।