মোদীকে ইউনূসের ফোন, বাংলাদেশের হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস

বাংলাদেশের হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আশ্বস্ত করেছেন সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।

মোদী একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

বিভিন্ন উন্নয়ন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করার জন্য ভারতের প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেন।

মোদী বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার খবর 'অতিরঞ্জিত' করা হয়েছে।

একই সঙ্গে তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সংখ্যালঘু সুরক্ষার বিষয় নিয়ে সরেজমিনে রিপোর্ট করার জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানান।

দুই নেতা নিজ নিজ জাতীয় অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপায় নিয়েও আলোচনা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এ তথ্য শেয়ার করে মোদি বলেন, তারা বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে মত বিনিময় করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী দিল্লির লালকেল্লায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি শিগরিই স্বাভাবিক হবে।

বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান সোমবার (১২ আগস্ট) বলেছেন, দেশের ২০ জেলায় ৩০ টি সংখ্যালঘু সংশ্লিষ্ট অপরাধ সংগঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি শুক্রবার (৯ আগস্ট) খোলাচিঠি দেয়।

চিঠিতে দাবী করা হয়, বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার সময় ৫২টি জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, "অনেক মন্দির হামলার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অনেক নারী নিগৃহিত হয়েছেন। কয়েকটি স্থানে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে অন্য সংখ্যালঘুরাও। মূলত ৫ আগস্ট থেকে এই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা অবিলম্বে এ অবস্থার অবসান চাই।"

দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকার শাহবাগসহ, বাংলাদেশের নানা স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। বাংদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে ও যুক্তরাজ্যেও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রবাসীরা।