গত সপ্তাহে কলকাতায় ৩১ বছর বয়সী একজন চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বুধবার রাতে “রাত দখল করার” জন্য ভারতের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার নারী মোমবাতি ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী “আমাদের মা, কন্যা এবং বোনদের ওপর সংঘটিত অত্যাচার”-এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে নারীদের ওপর সংঘটিত অপরাধের কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “দেশে এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আমি এই ক্ষোভ অনুভব করতে পারি।”
বুধবার ভারতের শীর্ষ পুলিশ সংস্থা এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছে। এই ঘটনার ফলে ডাক্তাররা নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছেন।
শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতাল থেকে ওই নারীর দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তে তাকে যৌন নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এই অপরাধের জড়িত থাকার অভিযোগে কর্তৃপক্ষ একজন পুলিশ স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেপ্তার করেছে।
ভারত জুড়ে বিক্ষোভ
সোমবার এই হত্যার প্রতিবাদে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে হাজার হাজার চিকিৎসক মিছিল করেন। তারা নিহতের জন্য বিচার ও হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান।
মঙ্গলবার এই বিক্ষোভ দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় ভারতের বেশ কয়েকটি শহরে হাসপাতাল সেবা ব্যাহত হয়। জরুরি পরিষেবা ছাড়া হাসপাতালের সব বিভাগে ৮ হাজারের বেশি সরকারি চিকিৎসক কাজ বন্ধ করে দেন।
বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বৈকল্পিক পরিষেবা স্থগিত করেছেন, দ্রুত ন্যায়বিচার এবং কর্মক্ষেত্রে আরও ভালো সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতে নারীর ওপর যৌন সহিংসতা একটি গুরুতর সমস্যা। এক’শ চল্লিশ কোটি মানুষের দেশটিতে ২০২২ সালে প্রতিদিন প্রায় ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এই মামলাকে ২০১২ সালে দিল্লির একটি বাসে একজন তরুণীকে গণধর্ষণ ও হত্যার সাথে তুলনা করা হচ্ছে। ওই ঘটনা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল এবং এর ফলে বেশ কিছু সংস্কার সাধিত হয়।
সরকার ২০১২ সালের ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে, একাধিকবার এই অপরাধ করার জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তি প্রবর্তন করেছিল এবং পিছু নেয়ার মতো ঘটনাকে যৌন অপরাধ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।