মোদী: ভারতের উদ্বেগ থাকবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

বৃহস্পতিবার (১৫ অগাস্ট) ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী দিল্লির লালকেল্লায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি শিগরিই স্বাভাবিক হবে।

তিনি বলেন, “আমরা আশা করি সংখ্যালঘুরা, হিন্দুরা নিরাপদে থাকবে। আমরা বাংলাদেশের অগ্রগতির পথের অংশীদার হব।”

এর আগে ৮ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানান মোদী।

শুভেচ্ছায় মোদী বলেন, “আমরা আশা করি হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।”

তিনি আরও বলেন, শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে উভয় দেশের জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ১৪ অগাস্ট, ২০২৪।

বুধবার (১৪ অগাস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় সীমান্ত হত্যা বন্ধ, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ ভারতের সঙ্গে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

উপদেষ্টা বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়। আগামী দিনগুলোতে জনগণের সম্পৃক্ততার ওপর আরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সেসময় বাংলাদেশের ঘটনাবলি সম্পর্কে অতিরঞ্জিত মিডিয়া প্রচারণার কথাও উল্লেখ করেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত থেকে আসা এ ধরনের বক্তব্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সহায়ক নয়।

সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যাক্ত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

জুলাই মাসের এক তারিখে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপক গণবিক্ষোভে পরিণত হয়। পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়ে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়।

শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ছাত্রদের নেতৃত্বে এক গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। সেদিন বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। শান্তিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৯ অগাস্ট বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার শপথ গ্রহণ করে।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সারা দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের বাসভবনে হামলা এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরসহ শত শত ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হাসিনার পতনের পরের দুই দিনে দেশে অন্তত ২৩২ নিহত হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।