১৫ আগস্ট উপলক্ষে বুধবার (১৫ আগস্ট) ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গেলে হামলার শিকার হন কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোকেয়া প্রাচীর নেতৃত্ব ৭০-৮০ জন সংস্কৃতিকর্মী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্বালন করে।
তাদের এই আয়োজন চলাকালে সেখানে ৩০-৪০ জনের মত যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়।
তারা হুমকি দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর করে। এসময় রোকেয়া প্রাচী সেটি ঠিক করতে গেলে লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়।
এক পর্যায়ে তিনি লুটিয়ে পড়লে সহশিল্পীরা তাকে উঠিয়ে নিয়ে বের হয়ে যান।
হামলার বিষয়ে রোকেয়া প্রাচী বলেন, "সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আমাদের ওপরে অতর্কিত হামলা হয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ আমাদের ঘিরে ধরে বেধড়ক পেটানো হয়।"
গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, "যারা পিটিয়েছে তারা আমাকে টার্গেট করে এসেছে। প্রত্যেককে আমার শিক্ষিত মনে হয়েছে। তারা খুব শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেছে। তাদের কথাবার্তা শুনেই বুঝেছি তারা দুষ্কৃতকারী নন।"
এর আগে বুধবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় তারা মোমবাতি প্রজ্বালন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রোকেয়া প্রাচী বলেন, "আজ আমরা সবাই এখানে একত্রিত হয়েছি, কারণ বাংলাদেশ পুড়েছে। আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি, কারণ আমাদের ১৯৭১ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি, কারণ আমাদের বঙ্গবন্ধুর ছবি পুড়েছে। ধানমন্ডির ৩২ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি বাংলাদেশ পুড়েছে বলে। আমরা এখানে কোনও রাজনীতির কথা বলতে আসিনি। বাংলাদেশ আমাদের সবার।''
তিনি বলেন, "আমরা এখানে শোক প্রকাশ করতে এসেছি শান্তিপূর্ণভাবে। আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করি। তিনি আমাদের জন্য এই বাংলাদেশ দিয়েছেন, সংবিধান দিয়েছেন। এই ৩২ যখন পুড়েছে, তখন আমাদের মনে হয়েছে আমরা পুড়েছি। আমরা ধানমন্ডি ৩২-এ দাঁড়িয়ে সারা বিশ্বের এই মহানায়কের কাছে ক্ষমা চাইছি, আমরা লজ্জিত, বাঙালি জাতি আজ লজ্জিত।"
রোকেয়া প্রাচী ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্রের সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী পুরষ্কার পান।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন ও বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ আসিফ নজরুলের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন রোকেয়া প্রাচী। তার বাবা আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আমলে মিরপুর ও পল্লবী শ্রমিক লীগের সভাপতি।