সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি রাশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুরস্ক অঞ্চলে তার দেশের আকস্মিক অনুপ্রবেশের পক্ষে কথা বলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকি বলেন, “রাশিয়া অন্যদের জন্য যুদ্ধ ডেকে এনেছে। এখন সেটা তাদের ঘরের দিকে ধাবিত হচ্ছে।”
রাতের টেলিভিশন ভাষনে জেলেন্সকি এই অনুপ্রবেশকে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু হিসেবে অভিহিত করে বলেন, রাশিয়ার বাহিনী কুরস্ক থেকে সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুমি অঞ্চলে বহু হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ওলেকজান্ডার সিরস্কি সোমবার জেলেন্সকির টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা এক ভিডিওতে বলেন, কিয়েভ কুরস্ক অঞ্চলের প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকিসহ কিয়েভ সরকার ৬ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া আক্রমণ সম্পর্কে সরাসরি খুব কমই কথা বলেছে। সে সময় ইউক্রেনীয় বাহিনী দ্রুত সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুদজা শহরে প্রবেশ করে। বাহিনী এখনো শহরের পশ্চিম অংশটি ধরে রেখেছে বলে জানা গেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক গ্যাস ট্রানজিট স্টেশনের সাইট।
সোমবার সকালে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক গভর্নরদের মধ্যকার এক বৈঠকে কুরস্ক-এর ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেক্সেই স্মিরনভ বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী অন্তত ১২ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠা করেছে এবং প্রায় ২৮টি গ্রাম দখল করে নিয়েছে। স্মিরনভ বলেন, ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ১২১ জন আহত হয়েছেন। ১ লাখ ২১ হাজার মানুষকে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে, আরও ৫৯ হাজার বাসিন্দা চলে যাবার অপেক্ষায়।
প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের আগ্রাসনকে ‘উস্কানি’ বলে অভিহিত করেছেন এবং রাশিয়া থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে বিতাড়িত করতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
কিয়েভের শীর্ষ সমর্থক ওয়াশিংটন দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে ইরানি যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে মস্কোকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ায় আঘাত হানতে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তারা তেমন কিছু বলেনি।
পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়া যখন ঘাঁটি গেড়ে বসানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, তখন ক্রেমলিনের বাহিনীকে অবাক করে দিয়ে এই হামলা চালানো হয়।
ভয়েস অফ আমেরিকার হোয়াইট হাউস সংবাদদাতা আনিটা পাওয়েল এবং ভয়েস অফ আমেরিকার কিম লুইস এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন। এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।