শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে 'গণহত্যার' তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘে বিএনপির চিঠি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণআন্দোলনের সময় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার যে 'গণহত্যা' চালিয়েছে তার আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইসের কাছে চিঠি হস্তান্তর করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রেখে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে 'অবৈধ' আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা ও হত্যার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটনের জন্য বিএনপি জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছে।”

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, চিঠিটি জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠানো হবে।

এর আগে সোমবার (১২ আগস্ট) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, জাতীয় নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দেয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের এ কথা জানান। “আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিয়েছি;” জানান বিএনপি মহাসচিব।

গত ৮ আগস্ট সরকার গঠনের পর, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের সঙ্গে বিএনপির এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, বৈঠকে নির্বাচনের বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

জাতিসংঘ

একটি সংসদ নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে জাতিসংঘ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দেশ জুড়ে নারী, যুবক এবং জনগণের পাশাপাশি সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বর অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক এক বিবৃতিতে বলেছেন, "মহাসচিব একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন।"

তিনি বলেন, মহাসচিব বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেছেন এবং তাদের মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের প্রধান সব রকমের সহিংসতার কর্মকাণ্ডের পূর্ণ, স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্তের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন, তার ডেপুটি মুখপাত্র বলেছেন।

পৃথক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে, জাতিসংঘের ডেপুটি মুখপাত্র বলেছেন যে তারা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে যোগাযোগ করছেন এবং আশা করেছেন যে সরকার গঠনের একটি উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে এবং সেখানে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার একটি "দ্রুততম সময়সূচী" থাকবে।

তিনি বলেন, যেকোনো কারণে যেকোনো জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান।

"এবং সংঘটিত হামলার রিপোর্টে আমরা শঙ্কিত," তিনি এক প্রশ্নের জবাবে উল্লেখ করেন।