বেশিদিন ক্ষমতা থাকলে সরকারের মধ্যে স্বৈরতান্ত্রিক ভাব চলে আসবেঃ খুশী কবির

খুশী কবির

অন্তবর্তীকালীন সরকার সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য কিছু নির্বাহী আদেশ দিতে পারেন বলেন মনে করছেন মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির। তিনি বলেন, তারা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে তাদের মধ্যে স্বৈরতান্ত্রিক ভাব চলে আসবে। তাই তাদের অতিরিক্ত বেশি দিন ক্ষমতায় থাকা ঠিক হবে না। ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।

সাক্ষাৎকার নেন আদিত্য রিমন।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান তিনটি অগ্রাধিকার কী হওয়া উচিত?

খুশী কবিরঃ প্রথম কাজ হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। মাঝখানে যেহেতু কোনও সরকার ছিলো না, তাই দেশে শান্তি ছিল না, অরাজকতা হচ্ছিলো। এই নৈরাজ্য বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসা।

তারপর যেটা প্রয়োজন, মানুষের জীবনযাপনের নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা। খাদ্য ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া। মানুষের মধ্যে যে ভয়-ভীতির যে পরিবেশ বিরাজ করছে, সেখান থেকে আস্থা ফিরিয়ে আনা।

একইসঙ্গে এই সরকার সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করতে পারছে, মানুষের মধ্যে সেই আস্থা নিয়ে আসা। এই তিনটি বিষয়ের পর সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ সর্বোচ্চ কতদিনের মধ্যে একটি অবাধ নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হওয়া দরকার?

খুশী কবিরঃ এই বিষয়টি অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। তারা তো এখনও দেশের সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে নাই। তাই এই মুহুর্তে এটা নিয়ে কিছু বলা কঠিন। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যেন আইন-আদালত সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। তাই একটি অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন জন্য কত সময় লাগবে, তার সময়-সীমা বলতে পারছি না। তবে, আমি মনে করি অতিরিক্ত অনেক বছর থাকলে তাদের মধ্যে স্বৈরতান্ত্রিক ভাব চলে আসতে পারে। কারণ তারা জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নেই।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ এমন একটি নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংবিধান পরিবর্তন করে দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকারের বিধান কি সংবিধানে স্থায়ী ভাবে সংযোজন যথেষ্ট বলে মনে করেন? নাকি প্রথমে একটি সংবিধান সভা নির্বাচন করে সেখানকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে একটি নতুন সংবিধান তৈরী করে, তার আলোকে নতুন নির্বাচন দেয়া উচিত?

খুশী কবিরঃ সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে সংসদ। অন্য কেউ সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে না। অনির্বাচিত সরকার তো সংবিধান করতে পারে না। তারা কিছু যুক্তও করতে পারবে না। তারা (এই সরকার) নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাহী কিছু আদেশ দিতে পারে। অনির্বাচিত সরকারের সংবিধানে হাত দেওয়া আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। এটা অগণতান্ত্রিক। এটা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ১৯৭১ সালের পরিপন্থী।

তারা যেটাই করুক না কেন জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামত নিয়ে করতে হবে। সার্বিকভাবে সবার মতামত নিয়ে কিভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব সেটা নিয়ে কিছু নির্বাহী আদেশ দিতে পারে। এর বাইরে কিছু না।