রংপুরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এ স্থানান্তর করা হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে সোমবার (১২ আগস্ট) মামলা পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।
রংপুর জেলা পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, “পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে মামলা তাজহাট থানা থেকে পিবিআই-এ স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন মামলার তদন্ত করবে পিবিআই।”
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড় এলাকায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই দিন পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ১৭ জুলাই তাজহাট থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী ওই থানার উপপরিদর্শক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়।
বুধবার (১৭ জুলাই) আবু সাঈদের (২৫) দাফন সম্পন্ন হয়। রংপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে, পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন আবু সাঈদ। এর আগে, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে আবু সাঈদের মরদেহ তার গ্রামে পৌঁছায়।
স্থানীয় জুনুদের পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে সাঈদ।পরে এলাকার খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর রংপুর সরকারি কলেজ থেকেও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন আবু সাঈদ।
এদিকে, শনিবার (১০ আগস্ট) কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে প্রথম নিহত আবু সাঈদের বাড়িতে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ঢাকায় পৌঁছানোর পর প্রথম বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আবু সাঈদকে স্মরণ করে বলেন, তিনি বাংলাদেশের সবার হৃদয়ে থাকবেন চিরকাল।
ড. ইউনূস বলেন, “এই সময়ে আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে, যে আবু সাঈদের ছবি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে। এটা কেউ ভুলতে পারবে না। অবিশ্বাস্য এক সাহসী যুবক বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এবং তারপর থেকে আর কোনো যুবক, কোনো যুবতী হার মানেনি।"