রাশিয়া কুর্স্কে ইউক্রেনের হামলার জবাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে

২০২৪ সালের ৮ আগস্ট, এই ছবিতে রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলের সীমান্ত এলাকায় ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর ওপর রুশ সু-২৫ যুদ্ধবিমান রকেট নিক্ষেপ করছে। (এপি মারফত রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস সার্ভিস)।

রাশিয়া কুর্স্ক অঞ্চলের পরিস্থিতিকে “ফেডারেল লেভেল” জরুরি অবস্থা বলে ঘোষণা করেছে এবং শুক্রবার সেখানে বাড়তি সেনা পাঠিয়েছে। এর আগে শত শত ইউক্রেনীয় সৈন্য রুশ সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়ে যাকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার মাটিতে কিয়েভের সবচেয়ে বড় হামলা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঐ ঘটনার চারদিন পর রাশিয়ার এই ঘোষণা।

এদিকে, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান থেকে নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের একটি শপিং মলে দিনদুপুরে আঘাত হেনেছে; এই হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত ও আরও ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

ডনেৎস্কের পূর্বাঞ্চলে কোস্তিয়ানতিনভকার এই শপিং মলটি শহরের বসতি এলাকার মধ্যেই অবস্থিত। হামলার পর পুরু কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে।

ডনেৎস্ক অঞ্চলের প্রধান ভাদিম ফিলাশকিন টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলেছেন, “এটা জনবহুল এলাকা লক্ষ্য করে আরও একটা হামলা। রাশিয়ার আরও একটা সন্ত্রাসী কাজ।”

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউক্রেনের আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশ মোকাবেলা করতে কুর্স্ক অঞ্চলে শক্তিবৃদ্ধি করা হচ্ছে। আরআইএ সংবাদ সংস্থা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে বলেছে, রাশিয়া একাধিক রকেট লঞ্চার, টানা কামান-বন্দুক, গাড়ি পরিবাহিত ট্যাঙ্ক এবং নিয়ন্ত্রিত যানবাহন মোতায়েন করছে।

কুর্স্কের নির্বাহী গভর্নর আলেক্সেই মিরনভ টেলিগ্রামে বলেছেন, “কুর্স্ক অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনার পরিস্থিতি এখনও কঠিন।”

ইউক্রেনের অতর্কিত অভিযান সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য উঠে আসেনি এবং তাদের কৌশলগত লক্ষ্য এখনও অস্পষ্ট। সে দেশের কর্মকর্তারা নির্দিষ্টভাবে এই অনুপ্রবেশ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না। উল্লেখ্য, মস্কোর প্রায় ৫০০ কিলোমিটার (৩২০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে এই অনুপ্রবেশ ঘটছে।

তবে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির এক শীর্ষ উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার বলেছেন, সীমান্ত অঞ্চলে হামলার কারণে রাশিয়া “বুঝতে শুরু করবে যে, যুদ্ধটা ধীরে ধীরে রুশ ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকে পড়ছে।”

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সে দেশের পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধক্ষেত্রের নানা স্থানে, বিশেষ করে ডনেৎস্ক অঞ্চলে তীব্র রুশ আগ্রাসন সামলানোর চেষ্টা করছে। এমন সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি ডনেৎস্কের নানা অংশ অধিগ্রহণ করতে চান যা ক্রেমলিনের বাহিনী এখনও দখল করেনি।

রাশিয়া জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছে এমন সময় যখন ৫০০ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছে বা ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন রুবল (প্রায় ৬০ কোটি ডলার) ছাড়িয়ে গেছে।