দেশকে ঠিক করতে যত সময় লাগে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে দেওয়া উচিতঃ মুজিবুল হক চুন্নু

জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু

দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার সঠিক কাঠামো তৈরি, দুর্নীতিবাজদের বিচারসহ সামগ্রকিভাবে দেশকে নিয়মের মধ্য আনতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের যতদিন সময় লাগে, তাদেরকে সেই সময় দেওয়া উচিত বলে মনে করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আদিত্য রিমন।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ অন্তর্বর্তীকালীন/ জাতীয়/ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান তিনটি অগ্রাধিকার কি হওয়া উচিত?

মুজিবুল হক চুন্নুঃ ঐক্যমতের ভিত্তিতে জাতীয় সরকার হতে পারে। এটা রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে হতে পারে, আবার রাজনীতির বাইরে থেকে হতে পারে। এটা মূলত নির্ভর করে যারা আন্দোলন করেছে, সেই ছাত্রদের ওপর। এটা নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই।

১. এখন তো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ অবস্থা। দেশে কোনও সরকার নেই। পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে না। সুতরাং প্রথম অগ্রাধিকার দিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে।

২. নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থার পরিবর্তন করে স্থায়ীভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের কাঠামো করা।

৩. প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা। দুর্নীতিবাজদের বিচার করা। আন্দোলনের সময় যাদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেইগুলোর তদন্ত কমিশন গঠন করে দায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা। ক্ষতিগ্রস্তদের শিক্ষার্থীদের পরিবারকে সহায়তা দিতে হবে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ সর্বোচ্চ কতদিনের মধ্যে একটি অবাধ নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হওয়া দরকার ?

মুজিবুল হক চুন্নুঃ আজকে দেশের এই অবস্থা কেন হলো? প্রথমে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। এরপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সব পেশার মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সরকার, দুর্নীতি ও নির্বাচন নিয়ে। এই সমস্ত বিষয়গুলো নিরপেক্ষ সরকারের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব। এটা করতে নূন্যতম একটা সময় লাগবে। আমরা মনে করি, এই সমস্ত বিষয়গুলো সমাধান করতে তাদের যতটুকু সময় লাগে, তাদেরকে সেই সময় দেওয়া উচিত। সেটা যতদিনই হোক।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ এমন একটি নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংবিধান পরিবর্তন করে দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকারের বিধান কি সংবিধানে স্থায়ীভাবে সংযোজন যথেষ্ট বলে মনে করেন? নাকি প্রথমে একটি সংবিধান সভা করে সেখানকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে একটি নতুন সংবিধান তৈরি করে তার আলোকে নতুন নির্বাচন দেয়া উচিত?

মুজিবুল হক চুন্নুঃ আমাদের বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিতে ভুল রয়েছে। এটা পরিবর্তন করে এমন একটি আধুনিক পদ্ধতি বের করতে হবে, যাতে কেউ ইচ্ছা করলেও কোনো জাল ভোট বা কারচুপি করতে পারবো না। আমরা মনে করি, এখন যে সরকার হবে, তারা যেহেতু দলনিরপেক্ষ, তারা যেভাবে চিন্তা করবে একটা দলীয় সরকার সেইভাবে চিন্তা করতে পারবে না। অনেক সময় দলীয় সরকার, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চিন্তা করে। তাই নিরপেক্ষ সরকারের পক্ষে সম্ভব সাধারণ মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে এটা করা। পরে সেটা সংবিধানে যুক্ত করা যাবে।