গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৮, ইসরায়েলে ছুরিকাঘাতে নিহত ২

গাজায় বাস্তচ্যুত মানুষের আশ্রয়স্থল এক স্কুলে ইসরায়েলি হামলার পর ফিলিস্তিনিরা সাহায্যের আবেদন করছেন। ফটোঃ ৪ অগাস্ট, ২০২৪।

রবিবার ভোরবেলা গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে এমন চারজন রয়েছে যারা একটি হাসপাতাল চত্বরের ভিতরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য নির্মিত একটি তাঁবু-শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল। এদিকে, তেল আবিবের উপকণ্ঠে এক ফিলিস্তিনি ছুরিকাঘাত করে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।

গাজায় প্রায় দশ মাস ধরে চলমান যুদ্ধ ও গত সপ্তাহে লেবানন ও ইরানে পৃথকভাবে হামলা চালিয়ে দুইজন সিনিয়র জঙ্গি নেতাকে হত্যার পর অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড ইরান ও তার মিত্রদের পক্ষ থেকে প্রতিশোধের ঝুঁকি ও হুমকি ফিরিয়ে এনেছে এবং আরও ধ্বংসাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধের ভয় তৈরি করেছে।

ইসরায়েলের ম্যাজেন ডেভিড অ্যাডম উদ্ধার পরিষেবা ও সংলগ্ন একটি হাসপাতালের বক্তব্য অনুযায়ী, সত্তরের কোঠায় বয়স এক নারী ও ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে এবং আরও দুই ব্যক্তি আহত হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এক ফিলিস্তিনি জঙ্গি এই হামলা চালিয়েছে এবং তাকে “নিরস্ত” করা হয়েছে।

উদ্ধারকারীরা বলেছেন, তিনটি আলাদা জায়গায় আহত ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রতিটি জায়গা পরস্পরের থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে অবস্থিত। পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলেছে, তারা বাকি সন্দেহভাজনদের খুঁজছে, তবে তারা পরে একজনের বেশি আততায়ী থাকার সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়।

হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ, যিনি তেহরানে এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন। হামলার জন্য ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। ফাইল ফটোঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪।

আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা

লেবাননে হেজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার এবং গত সপ্তাহে ইরানের রাজধানীতে হামাসের শীর্ষ নেতার উপর হামলা চালিয়ে হত্যার পর ইসরায়েল প্রত্যাঘাত মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। উভয় হত্যাই গাজায় চলমান যুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার ফলে শুরু হয়।

রবিবার ভোরবেলা গাজার আল-আকসা শহিদ হাসপাতাল চত্বরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য নির্মিত এই শিবিরে ইসরায়েলি হামলার ফলে এক নারীসহ চারজন নিহত হয় এবং অনেকে আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

দেইর আল-বালাহের হাসপাতালটি গাজার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত প্রধান স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেটি এখনও তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে হাজার হাজার মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। দেইর আল-বালাহের কাছে একটি বাড়িতে পৃথক এক হামলায় একটি মেয়ে ও তার বাবা-মা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এই হাসপাতাল।

মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, গাজার উত্তরাঞ্চলে আরেকটি হামলায় একটি বাড়ি ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে এবং তিন শিশু, তাদের বাবা-মা ও দাদিমাসহ কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত সরকারের অধীনস্থ নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী, গাজা সিটিতে গাড়িতে হামলা চালানোর ফলে আরও তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যারা রবিবার মৃতের সংখ্যা ঘোষণা করে, তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, গাজা সিটিতে একটি স্কুলকে আশ্রয় শিবিরে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। শনিবার সেখানে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন নিহত ও আরও ২১ জন আহত হয়েছে।