যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির সভাপতি সেনেটর বেন কারডিন এবং সেনেটর কোরি বুকার বাংলাদেশে বিক্ষোভকারী ছাত্রদের উপর সহিংসতার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর নিন্দা করেছেন। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এক বিবৃতিতে সেনেটর কারডিন এবং বুকার অভিযোগ করেন, “এই সব ভয়ঙ্কর কাজ” যে সব নিরাপত্তা বাহিনী করেছে, তাদের মধ্যে একটি আধা-সামরিক বাহিনী ছিল যার প্রাক্তন কিছু শীর্ষ অফিসারের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
“নিরাপত্তা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে একটি স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য, এবং একই সাথে বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে ও তাদের অভিযোগের সমাধান করার লক্ষে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য আমরা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি,” সেনেটররা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারী চাকুরীতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি – যা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের পরিবারের জন্য স্থান সংরক্ষণ করে, তা বাতিল এবং অর্থনৈতিক সুযোগের অভাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হাজার হাজার ছাত্র রাস্তায় নেমে আসে।
কিন্তু, বিবৃতিতে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের ন্যায়সম্মত অভিযোগ নিয়ে আলোচনা না করে, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবসহ বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী “পাশবিক বল প্রয়োগ করে শত শত বিক্ষোভকারীকে হত্যা এবং হাজার হাজার আহত এবং গ্রেফতার করে।”
“গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তির একটি হল শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হওয়ার এবং প্রতিবাদ করার অধিকার,” বিবৃতিতে বলা হয়।
“যেসব সাহসী ব্যক্তি তাদের মর্যাদা এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য আন্দোলন করছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে থাকবে। আমরা বাংলাদেশে মানবাধিকারের পক্ষে এবং যারা লঙ্ঘন করে তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য কথা বলে যাব,” সেনেটর কারডিন এবং বুকার তাদের বিবৃতিতে বলেন।
দিনের আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির জন্য বিদেশি কারিগরি সহায়তা নেয়া হবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রস্টার হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ’কথা বলেন।
তদন্তের জন্য ইতোমধ্যেই হাইকোর্টের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সোমবার ১৫০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন, তবে স্থানীয় পত্র-পত্রিকার খবরে ২১১জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েক হাজার এবং গ্রেফতারের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।