‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতা ও মৃত্যুতে আমরা লজ্জিত’, রিট শুনানিতে হাইকোর্ট বেঞ্চ

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ভবন।

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মৃত্যুর ঘটনায় গভীর লজ্জা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এ ছাড়া, প্রতিটি মৃত্যুকে ট্র্যাজেডি বলে আখ্যায়িত করেছে উচ্চ আদালত।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, “সব মৃত্যুই দুঃখজনক। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা লজ্জিত।”

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা এবং ডিবি হেফাজত থেকে ছয় সমন্বয়কের মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে রিটের শুনানিতে এ মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট।

শুনানিকালে আদালত আরো বলেছে, “সংবিধান ও আইনে সব বিষয় লেখা আছে। কিন্তু আমরা কেউ সংবিধান, আইন মেনে চলছি না। পুলিশ কি ধরনের আচরণ করবে তা তো সিআরপিসিতে পরিষ্কার বলা আছে। আমরা এমন কোনো কাজ করবো না, যাতে জাতির ক্ষতি হয়।”

আদালত রিট আবেদনের শুনানি মূলতবি করেছেন। বুধবার (৩১ জুলাই) এ বিষয়ে আবার শুনানি হবে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন প্রীতম।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী।

শুনানি শুরুর পর আদালত কক্ষে দুই দফায় হট্টগোল হয়। ‘বিশেষ উদ্দেশ্যে’ এই রিট করা হয়েছে বলে দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

শুনানি মূলতবির পর ব্যারিস্টার অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, “শিক্ষার্থীদের প্রাণ রক্ষার জন্য আমরা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রিট নিয়ে আদালতে এসেছি। আর যাতে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি না করা হয়, সেজন্য এসেছি। আমাদের সন্তানদের রক্ষার জন্য এসেছি। আমরা কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসিনি।”

এর আগে, সোমবার (২৯ জুলাই) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজত থেকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।

রিটে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।