দেশের নানা প্রান্তে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঢাকায় বিক্ষোভরত এক শিক্ষার্থীকে ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ। সোমবার, ২৯ জুলাই।

শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহতের প্রতিবাদ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবিতে সোমবার (২৯ জুলাই) ঢাকাসহ দেশের নানা স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ করার সময় আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।

সোমবার দুপুরে ঢাকার মিরপুরে ইসিবি চত্বরে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে ঘটনাস্থল থেকে ইউএনবির প্রতিবেদক জানান।

এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নেন।

এছাড়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুর-১০ নম্বরে আন্দোলনকারীরা মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

সোমবার দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনে জড়ো হওয়া বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আটক এবং 'চলমান আন্দোলন প্রত্যাহারে চাপ' দেওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা সমাবেশ করছিলেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার (২৯ জুলাই) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে তাঁরা সমাবেশ করেন।

যশোর ও কুষ্টিয়ায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচী পালন করতে পারেনি শিক্ষার্থিরা। পুলিশের ধরপাকড়ের মুখে তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলায় অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সুজয় শুভ জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে ২০-৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসানিক ভবনের নিচতলায় সভা করছিলেন তারা। এসময় ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা একে আরাফাতের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ২০-৩০ জন নেতাকর্মী লাঠি, রড ও পাইপ নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দাবী করেছেন তাদের বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দিয়েছে ছাত্রলীগসহ সরকারদলীয় লোকজন এবং কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে।

ময়মনসিংহে বিপুলসংখ্যক পুলিশ উপস্থিতির কারণে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি আন্দোলনকারীরা।

সোমবার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। এরপর রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

বগুড়ায় পুলিশের বাধা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। তবেবিক্ষোভের আগে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করে।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি-পুলিশ। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়।

ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার(২৯ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় এই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন কৌশলগত পয়েন্টে বিজিবি, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য ইউএনবি থেকে নেয়া হয়েছে।)