হ্যারিসের ব্যাপারে আরব-আমেরিকান ভোটাররা কি ভাবছেন?

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সফর চলাকালে ফিলিস্তিনিপন্থীদের বিক্ষোভ। ওয়ারেন, মিশিগান। ফাইল ফটোঃ ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নির্বাচনের লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়ে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্সিয়াল প্রার্থী হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে সমর্থন জানানোর কয়েক দিন পরই দুই প্রধান দলের শীর্ষ কর্মকর্তারা ডিয়ারবোর্নভিত্তিক আরব আমেরিকান নিউজের প্রকাশক ওসামা সিবলানিকে জিজ্ঞাসা করেছেন, হ্যারিস মেট্রো ডেট্রোয়েটে কেন্দ্রীভূত দেশের বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠীর সমর্থন ফিরে পেতে পারেন কিনা।

তার প্রত্যুত্তর, “আমরা এখন শুনছি।”

হ্যারিস মিশিগানের আরব আমেরিকারন ভোটারদের বোঝানোর কাজে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটরা বিশ্বাস করেন, মিশিগান এমন একটা অঙ্গরাজ্য যেখানে হ্যারিসকে নভেম্বরে হারলে চলবে না। হ্যারিসও এই রাজ্যের আরব আমেরিকানদের বোঝাতে চাইছেন যে, তিনি এমন একজন নেতা যার নেতৃত্বে তারা ঐক্যবদ্ধ ও একত্রিত হতে পারেন।

এই সম্প্রদায়ের নেতারা শোনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং অনেকের সঙ্গে হ্যারিসের টিমের প্রাথমিক আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। অনেকে বাইডেনের প্রতি বিরক্ত হয়েছিলেন কারণ তারা অনুভব করেছিলেন, কয়েক মাস প্রচারণার পরেও আশানুরূপ ফলাফল না আসেনি।

ডিয়ারবোর্নের মেয়র আবদুল্লাহ হামুদ বলেন, “বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর পর থেকে দরজা একটু খুলেছে। ডেমোক্রেটিক মনোনীত প্রার্থীদের এই জোট একত্রিত করার সুযোগ রয়েছে যা চার বছর আগে বাইডেনের প্রেসিডেন্সিতে শুরু হয়েছিল। তবে, এখন সমস্ত দায় বর্তাবে ভাইস প্রেসিডেন্টের উপর।”

হামুদ ও সিবলানির মতো আরব আমেরিকান নেতারা নানা ইঙ্গিত ও সংকেতের (যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দেওয়ার ক্ষেত্রে হ্যারিস আরও সরব হবেন) দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন। তারা হ্যারিসের প্রার্থীতা নিয়ে উচ্ছ্বসিত, তবে তারা নিশ্চিত হতে চান যে, ইসরায়েলের দ্ব্যর্থহীন সমর্থক হওয়ার বদলে হ্যারিস শান্তির দূত হয়ে উঠবেন।

তবে, হ্যারিসকে সূক্ষ্ম রেখার উপর দিয়ে হাঁটতে হবে। গাজার যুদ্ধ নিয়ে বাইডেনের অবস্থানকে প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করা হচ্ছে কিনা সেদিকে তার নজর রাখতে হবে। উল্লেখ্য, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বেশিরভাগটাই নেপথ্যে থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য প্রাণপণে কাজ করে চলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ভাষণ দিতে গত সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সফর চলাকালে গত ওয়াশিংটনে হ্যারিসের নিজের দলের মধ্যে বিভাজন প্রকট হয়েছিল।

হ্যারিস ওই সভায় যোগ দেননি।

কয়েকজন আরব আমেরিকান নেতা হ্যারিসের এই অনুপস্থিতিকে (পরিবর্তে তিনি ইন্ডিয়ানাপোলিসে এক প্রচারসভায় যোগ দিয়েছিলেন) তাদের সঙ্গে ইতিবাচক বা ভাল বিশ্বাসের চিহ্ন হিসেবে দেখছেন। বৃহস্পতিবার হ্যারিস নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে, একে তারা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার চলমান দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করছেন।

আরব আমেরিকানরা মনে করেন মিশিগানের মতো গুরুত্বপূর্ণ সুইং-স্টেটগুলিতে তাদের ভোটের পর্যাপ্ত নির্বাচনী গুরুত্ব রয়েছে। তারা নিশ্চিত করতে চাইছেন, কর্মকর্তারা তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।

এদিকে, ট্রাম্প ও তার প্রচারণা বিভাগ ডেমোক্রেটিক ঘাঁটিগুলির মধ্যে তৈরি হওয়া গোলযোগ ও অশান্তি সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতন এবং তারা সক্রিয়ভাবে আরব আমেরিকান ভোটারদের সমর্থন চাইছেন।