বাংলাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন কর্মীদের ওপর গুলি না করার এবং গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজত থেকে ছয় সমন্বয়কারীকে মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
এই সমন্বয়করা হলেন, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুম।
সোমবার (২৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন প্রীতম ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি জনস্বার্থে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই রিট দায়ের করেন।
এই বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনিচ উল মাওয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
শুনানির একপর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী এই ছয়জন (সমন্বয়ক) কাঁটাচামচ দিয়ে খাচ্ছে, এমন দৃশ্য তিনি টেলিভিশনে দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন।
আদালত তখন বলেন, "জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।"
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন-অর-রশীদ হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়কের সাথে রবিবার (২৮ জুলাই) ডিনারের ছবি তার ফেসবুকে শেয়ার করেন।
এবং সেই ডিনারের ভিডিও বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) সমন্বয়কদের স্বজনদের সাথে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের ভাত খাওয়ার ভিডিও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।
ওদিকে সোমবার (২৯ জুলাই) রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে, হাইকোর্ট পরবর্তী শুনানি ও পরে এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার জন্য মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দিন ধার্য করেন।
শুনানিতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী ও শেখ মোহাম্মদ মোর্শেদ।
গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। পরে শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহকে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে।
রবিবার (২৮ জুলাই) রাতে ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এক ভিডিও বার্তায় তাদের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এই ঘোষণার পর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন সমন্বয়করা বিবৃতি দিয়ে তাদের নয় দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।