শেখ হাসিনার প্রতি পদত্যাগের আহবান জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চ

এক সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। ২৯ জুলাই, ২০২৪।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি পদত্যাগের আহবান জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

এ জন্য তারা, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহবান জানিয়েছে। সোমবার (২৯ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চ এই আহবান জানায়। একই সঙ্গে তারা, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের হত্যাসহ পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিসহ ছয় দফা দাবি তুলে ধরে।

রাজধানী ঢাকার মেহরাবাবা প্লাজায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক দাবিগুলো তুলে ধরেন।

সাইফুল হক বলেন, ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ব্যর্থ হয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকার ও ক্ষমতাসীন দল সম্পূর্ণরূপে দায়ী।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সৃষ্ট গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্র করে সরকার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির দায় নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।”

গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে; দ্রুত কারফিউ প্রত্যাহার এবং বিজিবিসহ সশস্ত্র বাহিনী ও বিশেষ বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া; ইন্টারনেট সেবা সম্পূর্ণরূপে সচল করা; গণমাধ্যমে সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধ করা;

অন্য দাবিগুলো হলো; যারা আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়েছে ও হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিয়েছে এবং তা কার্যকর করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা; গ্রেপ্তার বিরোধী দলের নেতা ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি দেয়া; ডিবি পুলিশের হেফাজতে থাকা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের মুক্তি দেয়া, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া এবং ঢাকায় ব্লক রেইড বন্ধ করা এবং শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া।

বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য, সকল গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলসহ সকল সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতি আহবান জানান সাইফুল হক।

ওদিকে গত সপ্তাহে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের স্মরণে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সারাদেশে শোক পালন করা হবে। সোমবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।

তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে, মঙ্গলবার নিহতদের স্মরণে প্রত্যেকে কালো ব্যাজ ধারণ করবেন এবং মসজিদ, মন্দির ও উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে; জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।