রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সঙ্গে ক্রেমলিনে সাক্ষাৎ করেছেন। বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন প্রেস সার্ভিসের সরবরাহ করা ভিডিওতে তা দেখা গেছে।
পুতিন আসাদকে বলেছেন, তিনি উদ্বিগ্ন যে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উভয় নেতাই তাদের বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেননি। ২০১৫ সাল থেকে রাশিয়া ইরানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিরিয়াতে সেনা পাঠিয়েছে। সিরিয়ায় আসাদ সরকার যাতে সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই করতে পারে ও সে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয় সে জন্যই এই অভিযান। রাশিয়া এখন তাদের সামরিক বাহিনীর বৃহত্তর অংশকে ইউক্রেনে মোতায়েন করে রাখলেও সিরিয়াতে তাদের সামরিক ঘাঁটি ও উপস্থিতি বজায় রেখেছে।
পুতিন আসাদকে বলেছেন, “সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলের পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তা নিয়ে আপনার মতামতে আমি ভীষণ আগ্রহী। দুর্ভাগ্যবশত, সংঘাত বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে। আমরা সেটা দেখতে পাচ্ছি। এটা প্রত্যক্ষভাবে সিরিয়ার জন্যও খাটে।”
ক্রেমলিন জানিয়েছে, বুধবার পুতিন ও আসাদের বৈঠক হয়েছে।
সিরিয়ার ১২ বছরব্যাপী অভ্যুত্থান তথা গৃহযুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে পুতিন ও আসাদ শেষবার ক্রেমলিনে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেই বৈঠকে, সিরিয়াকে স্থিতিশীল করতে রুশ সামরিক বাহিনীর ভূমিকার উপর জোর দিয়েছিলেন।
আসাদ রুশ অনুবাদক মারফত পুতিনকে বলেন, “সারা বিশ্বে ও ইউরেশীয় অঞ্চলে বর্তমানে যে সব ঘটনা ঘটছে তা বিবেচনায় রেখে আমাদের আজকের বৈঠক খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়।”
ক্রেমলিন পুতিন ও আসাদের বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। তবে, এই আলোচনার একটি সম্ভাব্য বিষয় ছিল, রাশিয়া ও তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা।
আসাদ সরকারের জোরালো সমর্থকদের মধ্যে রাশিয়া অন্যতম, তবে তুরস্কের সঙ্গেও তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং পুনরায় সম্পর্ক ও যোগাযোগ স্থাপনে ফেরার চেষ্টা করছে রাশিয়া।
২০১১ সালে তুরস্ক ও সিরিয়া তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছিল। সিরিয়ায় সরকার-বিরোধী গণ-আন্দোলন ও সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নৃশংস দমনপীড়ন গৃহযুদ্ধের আকার নিয়েছে এবং যা এখনও চলছে। আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে উৎসাহী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে সাহায্য করেছে তুরস্ক এবং বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এখনও সামরিক বাহিনী রেখেছে তুরস্ক। এতে দামাস্কাস ক্ষুব্ধ।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে তুরস্ক, সিরিয়া ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা মস্কোতে বৈঠকে বসেছিলেন। ২০১১ সালের পর থেকে এটাই ছিল তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে মন্ত্রী-পর্যায়ের প্রথম বৈঠক। গত বছর সিরিয়া ও তুরস্কের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার জন্য মধ্যস্থতাও করেছে রাশিয়া।