যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের অনুকূলে বাতাস বইছে বলে মনে হচ্ছে, কেননা নভেম্বরের নির্বাচনের ময়দান থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর ডেমোক্রেটিক দলের আইনপ্রণেতা, গভর্নর ও আর্থিক দাতারা দলের প্রেসিডেন্সিয়াল নমিনি হবার জন্য তাকে সমর্থন জানিয়েছেন।
রবিবার আকস্মিক ঘোষণার পর বাইডেন রিপাবলিকান দলের প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হ্যারিসকে ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন জানিয়েছেন।
৫৯ বছর বয়সী হ্যারিস দ্রুত ঘোষণা করেন, তিনি মনোনয়ন চাইবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর ছিলেন। ২০২০ সালে বাইডেন তার ঘনিষ্ঠতম রাজনৈতিক সহযোগী বা ‘রানিং মেট’ হিসেবে হ্যারিসকে বেছে নেন।
একাধিক জাতীয় সমীক্ষায় হ্যারিসের অনুমোদন রেটিং-এ অনেকাংশে বাইডেনের রেটিং-এরই প্রতিফলন ঘটেছে। তবে একই ভোটারদের নিয়ে করা কিছু সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাইডেনের ফলাফলের চেয়ে হ্যারিস সামান্য ভাল ফল করেছেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে, ট্রাম্পকে ভোটের নিরিখে অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়েছেন হ্যারিস।
হ্যারিস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের মাধ্যমে বাইডেন “তার গোটা কর্মজীবনে যেটা করে এসেছেন সেটাই করছেন: তিনি আমেরিকার জনগণ ও আমাদের দেশকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে রেখেছেন।”
তিনি বলেন, "ট্রাম্পকে পরাস্ত করার জন্য ডেমোক্রেটিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে, আমাদের দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে আমার ক্ষমতা অনুযায়ী আমি সব কিছু করব। নির্বাচনের আগে আমাদের হাতে ১০৭ দিন রয়েছে। আমরা সম্মিলিতভাবে লড়ব এবং সম্মিলিতভাবেই আমরা জয়ী হবো।"
সোমবার সকালে হ্যারিসের প্রচারণা বিভাগ বলেছে, বাইডেনের নির্বাচনী ময়দান থেকে সরে দাঁড়ানো ও হ্যারিসের প্রার্থীতার প্রতি সমর্থনের পর থেকে ক্ষুদ্র অনুদানের মাধ্যমে তারা ৪.৯৬ কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে। জুন মাসের শেষ দিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিতর্কসভায় বাইডেনের দুর্বল উপস্থাপনার পর তার প্রতি সমর্থকদের, বিশেষ করে শীর্ষ দাতাদের সমর্থন কয়েক সপ্তাহ ধরে কমে গিয়েছিল, তবে এই সংগৃহীত তহবিল সেই পরিস্থিতির বিপরীত চিত্র তুলে ধরেছে।
দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ স্টেট ডেমোক্রেটিক কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে হ্যারিসকে অঙ্গরাজ্যগুলির দলীয় নেতাদের একটা “ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ” অংশ সমর্থন জানিয়েছেন; পদ্ধতিগত কারণে অনেকে বিরত থেকেছেন।
রবিবার হ্যারিসকে যারা সমর্থন করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বাইডেনের মন্ত্রিসভার অন্তত একজন সদস্য আর তিনি হলেন পরিবহনমন্ত্রী পিট বুটিজিজ। তিনি বলেন, হ্যারিসকে নির্বাচনে সাহায্য করতে “আমি যতদূর পারি” করব।
বাইডেনের পরিবর্তে হ্যারিসকে যদি দল গ্রহণ করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৮ বছরের ইতিহাসে তিনিই হবেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও দক্ষিণ এশিয়ার বংশোদ্ভূত প্রধান দলের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনীত প্রার্থী।