অস্ত্র-নিয়ন্ত্রণ আলোচনায় চীনের স্থগিতাদেশ কৌশলগত স্থিতিশীলতাকে খর্ব করছে, বলছে যুক্তরাষ্ট্র

কুচকাওয়াজের সময় ডিএফ-৪১ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী চীনের সাঁজোয়া গাড়ি অগ্রসর হচ্ছে; চীনের পতাকা ওড়াচ্ছে অনেকে। বেইজিং, চীন। ফাইল ফটোঃ ১ অক্টোবর, ২০১৯।

অস্ত্র-নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুরু হতে যাওয়া আলোচনা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র একে “দুর্ভাগ্যজনক” আখ্যা দিয়ে উল্লেখ করেছে, কৌশলগত ঝুঁকি সামলানো ও ব্যয়বহুল অস্ত্র-প্রতিযোগিতা রোখার উদ্যোগে সামিল না হওয়ার পথকেই বেছে নিয়েছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বুধবার এক সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সংবাদদাতাদের বলেন, “আমাদের মনে হয়, (চীনের) এই আচরণ কৌশলগত স্থিতিশীলতাকে খর্ব করছে। এটা অস্ত্র-প্রতিযোগিতার ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করতে আমরা একাধিক উদ্যোগ নিয়েছি এবং তাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চীনা হুমকির সামনে আমরা এই প্রচেষ্টাগুলি অব্যাহত রাখব।”

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার ঘোষণা করেছে, বেইজিং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও বিস্তার রোধ নিয়ে নতুন দফা আলোচনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত তাইওয়ানকে ওয়াশিংটনের অস্ত্র বিক্রয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। উল্লেখ্য, তাইওয়ান একটি স্বশাসিত গণতন্ত্র যাকে বেইজিং নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করছে।

মিলার আরও বলেন, “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যেখানে অন্যান্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেখানে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে না বলে রাশিয়ার যে অবস্থান তাকেই বেছে নিয়েছে চীন।”

২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর, পররাষ্ট্র দফতরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা ঝুঁকি হ্রাস সংক্রান্ত নতুন কৌশলগত আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বা সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ সম্পর্কিত কৌশলগত ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে তিনটি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে উভয় দেশের ‘স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডদের’ মধ্যে সংকটকালীন কৌশলগত ‘হটলাইন’ স্থাপন, মহাকাশে সংঘাত এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের প্রয়োগ এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়ে অবহিত করা। রাশিয়ার সঙ্গে চীন এই নিয়মগুলি পালন করে থাকে।

কৌশলগত ঝুঁকি হ্রাস নিয়ে নতুন দফার আলোচনা স্থগিত করার চীনের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতি নয় বলে অভিহিত করা হয়েছে, কারণ এই বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্রের মতে, নভেম্বরে আলোচনা চলাকালে চীনের কর্মকর্তারা কোনও উদ্যোগের প্রস্তাব দেননি।

এই সূত্র আরও উল্লেখ করেছে, আগের প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে অনুরূপ আলোচনায় বাস্তব ও কার্যকরী ফলাফল উঠে আসেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সরকারের সঙ্গে সরকারের চলমান যোগাযোগ ও আদানপ্রদানের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।