বাংলাদেশে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বোরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের (২৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল রংপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে, পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন আবু সাঈদ।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে আবু সাঈদের মরদেহ তার গ্রামে পৌঁছায়। এরপর সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শোক আর কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন পেশায় একজন দিনমজুর। অর্থাভাবে কোনো ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করাতে পারেননি তিনি। আবু সাঈদ ছোটবেলা থেকেই ছিলেন মেধাবী। নয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন সাঈদ।
তাকে ঘিরে আকাশসম স্বপ্ন ছিল দরিদ্র বাবা-মা ও ভাইবোনদের। তাকে হারিয়ে বিহ্বল হয়ে পড়েছে পরিবারটির। নিজ প্রচেষ্টায় লেখাপড়া করছিলেন সাঈদ। সদাচারের কারণে গ্রামে সবার প্রিয় ছিলেন তিনি।
এলাকাবাসী জানায়, ছোট থেকেই আবু সাঈদ ছিলেন মেধাবী। বিনয়ী ব্যবহারের কারণে তার প্রতি সবাই মুগ্ধ ছিলো। স্থানীয় জুনুদের পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে সাঈদ।
পরে এলাকার খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর রংপুর সরকারি কলেজ থেকেও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন আবু সাঈদ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকায় থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যায়। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ‘রাবার বুলেট’ ছোঁড়ে। এতে নিহত হন আবু সাঈদ।