পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ওপর আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার।
ইসলামাবাদে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “তেহরিক-ই-ইনসাফকে নিষিদ্ধ করার জন্য আমাদের কাছে খুব বিশ্বাসযোগ্য কারণ রয়েছে।”
তিনি ইমরানের দলের বিরুদ্ধে বিদেশী তহবিল গ্রহণ এবং রাষ্ট্রবিরোধী দাঙ্গা সংগঠিত করার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের সরকার নিষেধাজ্ঞার জন্য পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে যোগাযোগ করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে খানের দল থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ইমরান খানের দল সমস্ত আইনসভায় নারী ও অমুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলিতে অংশ নেয়ার অধিকার পাবার পর এই ঘোষণা আসে । এই রায়ের ফলে পিটিআই প্রায় ৮০টি আসন পাবে। এর ফলে পাকিস্তানের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে শরিফের ক্ষমতাসীন জোট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে বঞ্চিত হলো।
শীর্ষ আদালতের রায় সোমবার পুনর্বিবেচনার আবেদন করে সরকার। দলটিকে নিষিদ্ধ করার সরকারের পরিকল্পনা 'আতঙ্কের লক্ষণ' বলে মন্তব্য করেছেন পিটিআই নেতা সৈয়দ জুলফিকার বুখারি।
এদিকে পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে আমেরিকা পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা নিশ্চিত ভাবেই উদ্বেগজনক।
পাকিস্তানের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির উপর আঘাত বলে অভিহিত করেছে, তারা পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা অবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
কমিশন মনে করে, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতার শক্তিশালী সম্ভাবনা ছাড়া এটি আর কিছুই ডেকে আনবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তারা এ কথা বলে।
এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মঙ্গলবার সরকার এটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করবে বলে জানা গেছে।
৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে খানের দল স্বতন্ত্র নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে একক বৃহত্তম জাতীয় দল হিসাবে ৯৩ টি আসন জিতে নেয়। দলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আদেশ কার্যকর হলে সংরক্ষিত আসনই কেবল নয় বর্তমান সদস্যদেরও বিধান সভা ছাড়তে হবে।