ট্রাম্প হত্যাচেষ্টার নিন্দায় বিশ্ব নেতারা, প্রত্যাখ্যান করলেন রাজনৈতিক সহিংসতা

দক্ষিণ কোরিয়ার সোলে এক সংবাদ পত্রে ডনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার খবর। ফটোঃ ১৫ জুলাই, ২০২৪।

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় শনিবার এক নির্বাচনী সমাবেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে রাজনৈতিক সহিংসতা ও হত্যা প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক সংস্থা।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ এখনও গুলির ঘটনার তদন্ত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি শনিবার রাতে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাইডেন একে সংক্ষিপ্ত ও ভালো কথাবার্তা বলে বর্ণনা করেছেন। রবিবার সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, “হত্যা করার চেষ্টার ঘটনাটি জাতি হিসেবে আমাদের অবস্থানের সবকিছুর পরিপন্থি।”

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিষয়টি নিয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কূটনৈতিক আলোচনা নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সাবেক টুইটার এক্স-এ এক বার্তায় লিখেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমাবেশে গুলিবর্ষণের ঘটনায় তিনি “মর্মাহত ও দুঃখিত'” এবং তিনি কৃতজ্ঞ যে ট্রাম্প নিরাপদে আছেন।

আর্জেন্টিনা

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলে এক্স-এ এক পোস্টে জানিয়েছেন, এই হত্যাচেষ্টার মধ্য দিয়ে “আন্তর্জাতিক বামপন্থিদের হতাশা”এবং “গণতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সহিংসতা উস্কে দেওয়ার” ইচ্ছাই প্রকাশ পেয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর “ক্ষমার অযোগ্য আক্রমণ” বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

তিনি অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট হাউজে সাংবাদিকদের বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মতো অস্ট্রেলিয়াতেও আমাদের গণতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা আমাদের মতামত প্রকাশ করতে পারি, মতবিরোধ নিয়ে বিতর্ক করতে পারি এবং আমাদের মতপার্থক্যগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে পারি।”

বাংলাদেশ

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন। ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা এই হামলাকে “সত্যিকার অর্থেই দুঃখজনক” বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে গণতন্ত্রের মশাল বাহক সেখানে কীভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে?”

ব্রাজিল

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক পোস্টে বলেছেন, নির্বাচনী সমাবেশে গুলি চালানোর ঘটনা অগ্রহণযোগ্য এবং গণতন্ত্রের সব রক্ষককে অবশ্যই তা “তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান” করতে হবে।

তার পূর্বসূরি জাইর বোলসোনারো যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র, তিনি সংহতি প্রকাশ করে বলেছেন, (ট্রাম্প) “এই মুহূর্তে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা।” বোলসোনারো ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এক নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠানে ছুরিকাহত হয়েছিলেন। ঐ নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন।

কানাডা

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, ট্রাম্পের এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত এবং সকল আমেরিকানের প্রতি তার সমবেদনা রয়েছে।

তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “একে অতিরঞ্জিত করা যাবে না - রাজনৈতিক সহিংসতা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।”

চীন

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ট্রাম্পের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং চীন গুলির ঘটনার ওপর নজর রাখছে।

জিবুতি

জিবুতির প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ওমর গুয়েলেহ ট্রাম্পের ওপর “নিন্দনীয় ও ভীতিকর হত্যাচেষ্টার” তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “রাজনৈতিক সহিংসতা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুতর হুমকি, একে অবশ্যই দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা ও নিষিদ্ধ করতে হবে।”

মিশর

মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এক বিবৃতিতে তার দেশের পক্ষে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারণা পুনরায় শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

ইথিওপিয়া

ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বলেছেন, ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে হামলার ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। আবি এক্স-এ লিখেছেন যে তিনি আমেরিকান জনগণের জন্য শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মৌসুম কামনা করেছেন।

ইউরোপীয় কমিশন

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এক্স-এ জানিয়েছেন, গুলির ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই।

ফ্রান্স

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। তিনি এক্স-এ জানিয়েছেন, আমাদের গণতন্ত্রের জন্য এটা ট্র্যাজেডি। ফ্রান্স আমেরিকান জনগণের সঙ্গে শোক ও ক্ষোভের সাথে একমত।”

জার্মানি

এক্স-এর এক পোস্টে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, এই হামলা “জঘন্য” এবং “এ ধরনের সহিংসতা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।” তিনি বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের সকলের প্রতি তার সমবেদনা রয়েছে।

গ্রিস

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। “আমাদের গণতান্ত্রিক সমাজে রাজনৈতিক সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য," তিনি এক্সে লিখেছেন।

গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল

গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল জাসেম আল-বুদাইয়ি ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে আল-বুদাইয়ি বলেন, কোনো অবস্থাতেই সন্ত্রাস ও সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন এই ঘটনা মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও মানদণ্ডের পরিপন্থি।

হাঙ্গেরি

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এক্স-এ লিখেছেন, “এই অন্ধকার সময়ে” তিনি ট্রাম্পের জন্য প্রার্থনা করছেন।

ভারত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “আমার বন্ধুর ওপর হামলার ঘটনায়” তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।“এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। রাজনীতি ও গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই,” তিনি এক্স-এ মন্তব্য করেন।

ইরাক

ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের প্রধানমন্ত্রী মাসরুর বারজানি “কঠোর ভাষায়” এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “এই কাণ্ডজ্ঞানহীন সন্ত্রাসী আক্রমণের যারা শিকার তাদের প্রতি তার সমবেদনা রয়েছে”।

ইসরায়েল

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গুলিবর্ষণের কিছুক্ষণ পর এক্স-এ লিখেছেন যে তিনি এবং তার স্ত্রী ট্রাম্পের উপর “আক্রমণে মর্মাহত” হয়েছেন এবং ট্রাম্পের সুরক্ষা এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

জেরুজালেমে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকের শুরুতে নেতানিয়াহু এই হামলাকে “আমেরিকার গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা”বলে মন্তব্য করেছেন।

ইতালি

ইতালির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই হামলা গুরুতর উদ্বেগের কারণ এবং “নাগরিক কাঠামোর অবনতি এবং সংঘাত, সংলাপ ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা বিপজ্জনক মাত্রায় কমে যাওয়ার লক্ষণ।”

প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

জাপান

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এক্স-এ ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বলেছেন, “গণতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করে এমন যেকোনো ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে।

পশ্চিম জাপানের ওয়াকায়ামায় ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল একটি প্রচারণা অনুষ্ঠানে এক ব্যক্তি তার দিকে একটি বিস্ফোরক নিক্ষেপ করার পরে কিশিদাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০২৩ সালের এপ্রিলে জাপানের নারা শহরে এক নির্বাচনী প্রচারণায় ভাষণ দেওয়ার সময় দু'বার গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

লিথুয়ানিয়া

লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাউসেদা রাজনৈতিক সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। “গণতন্ত্রে এর কোনো স্থান নেই,” তিনি এক্স-এ এই মন্তব্য করেন।

মেক্সিকো

মেক্সিকোর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর এক্স-এ এক বার্তায় হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “সহিংসতা অযৌক্তিক ও অমানবিক।

নেটো

নেটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ ট্রাম্পকে হত্যা করার প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন। এক্স-এ স্টলটেনবার্গ লিখেছেন, “আমাদের গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনও স্থান নেই" এবং আটলান্টিক জোট স্বাধীনতা ও মূল্যবোধ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ।

নাইজেরিয়া

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবু এই হামলাকে “অত্যন্ত আপত্তিকর” এবং “গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সীমা ছাড়িয়ে গেছে” বলে মন্তব্য করেছেন।

“গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনও স্থান নেই,” তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “নাইজেরিয়া এ মুহুর্ত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সংহতি প্রকাশ করছে।”

অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস

অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটসের মহাসচিব লুইস আলমাগ্রো বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হামলার “কঠোর ভাষায়” নিন্দা জানান। “নির্বাচনে, রাজনীতিতে অথবা আমাদের সমাজে সহিংসতার একেবারেই কোনো স্থান নেই।

পাকিস্তান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই ঘটনাকে “মর্মান্তিক ঘটনা” হিসেবে বর্ণনা করে সব ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন এবং ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন।

কারাবন্দি পাকিস্তানের বিরোধী নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ট্রাম্পের পূর্ণ আরোগ্য কামনা করেছেন। তিনি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে এক সমাবেশে গুলিবিদ্ধ এবং আহত হয়েছিলেন। “রাজনৈতিক সহিংসতা কাপুরুষদের একটি হাতিয়ার এবং গণতন্ত্রে এর কোনও স্থান নেই,” তিনি এক্সে লিখেছেন।

ফিলিপাইন

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ "বংবং" মার্কোস জুনিয়র এক্স-এ লিখেছেন, “আমরা অত্যন্ত স্বস্তির খবর পেয়েছি যে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সুস্থ আছেন এবং তাকে হত্যা করার চেষ্টার পরেও তিনি ভাল আছেন।

মার্কোস আরও বলেন, “বিশ্বের সব গণতন্ত্রকামী মানুষের সঙ্গে আমরাও সমস্বরে সব ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার নিন্দা জানাই। জনগণের কণ্ঠ সবসময় শীর্ষে থাকতে হবে।”

রাশিয়া

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ট্রাম্পকে ফোন করার কোনো পরিকল্পনা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেই।

রবিবার ক্রেমলিন বলেছে, ট্রাম্পর উপড়ে শনিবার যে হত্যাচেষ্টা চালানো হয় তাতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন দায়ী বলে তারা বিশ্বাস করে না, তবে তারা “রাজনৈতিক টানাপোড়নের সময়” যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের তৈরি করা পরিবেশের সমালোচনা করেছে।

সৌদি আরব

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “সৌদি আরব ট্রাম্পকে হত্যা প্রচেষ্টার নিন্দা জানাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের প্রতি সম্পূর্ণ সংহতি জানাচ্ছে।তারা আরও বলেছে, রাজতন্ত্র “সব ধরনের সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে।”

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং বলেছেন, ট্রাম্প নিরাপদে আছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন এমন খবর পেয়ে তিনি স্বস্তি বোধ করছেন। ওং এক্স-এ লিখেছেন, “ দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু আমাদের কখনই সহিংসতার আশ্রয় নেওয়া উচিত নয়।”

দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এক্স-এ লিখেছেন যে এই হত্যার প্রচেষ্টা "রাজনৈতিক চরমপন্থা এবং অসহিষ্ণুতার বিপদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

রামাফোসা আশা প্রকাশ করে বলেন, “আমেরিকার নাগরিক ও নেতাদের সহিংসতা প্রত্যাখ্যান ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের মতো ধৈর্য ও বিচক্ষণতা থাকবে।

দক্ষিণ কোরিয়া

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল বলেছেন, রাজনৈতিক সহিংসতার এই ঘৃণ্য ঘটনায় তিনি হতবাক হয়েছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “কোরিয়ার জনগণ আমেরিকার জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে।”

স্লোভাকিয়া

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। মে মাসে তাকেও হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু তিনি বেঁচে যান। ফেসবুকে একটি পোস্টে, ফিকো এই দুইটি ঘটনার মধ্যে সরাসরি তুলনা করে বলেন, ট্রাম্পের উপর আক্রমণ “একই কপিবই থেকে নিয়ে লেখা” এবং ইঙ্গিত দেন যে আক্রমণ ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দ্বারা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছিল।

তাইওয়ান

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং তে বলেন, তিনি ট্রাম্পের জন্য প্রার্থনা করবেন। “আমাদের গণতন্ত্রে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”

তুরস্ক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই হত্যাচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন এবং সংহতি প্রকাশ করেছেন। এরদোয়ান বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আমেরিকার নির্বাচন ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর যাতে কোনো ছায়া না পড়ে তা নিশ্চিত করতে এই হামলার তদন্ত সবচেয়ে কার্যকরভাবে করা হবে।”

ইউক্রেন

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ট্রাম্প এখন নিরাপদে আছেন জেনে তিনি স্বস্তি পেয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, “গোলাগুলির ঘটনা জানতে পেরে আমি মর্মাহত। এ ধরনের সহিংসতার কোনো যৌক্তিকতা নেই এবং বিশ্বের কোথাও এর কোনো স্থান নেই।

জাতিসংঘ

জাতিসংঘের মুখপাত্র ষ্টেফান ডুজারিক বলেন, মহাসচিব আন্তোনিও গুটেরেস দ্ব্যর্থহীনভাবে এই রাজনৈতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন এবং ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলার নিন্দা জানিয়ে একে “অপরাধমূলক ও চরমপন্থি” পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছে।

যুক্তরাজ্য

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমার এক্স-এ বলেছেন যে তিনি “ভয়াবহ দৃশ্য" দেখে মর্মাহত হয়েছেন এবং ট্রাম্প এবং তার পরিবারকে তার শুভকামনা পাঠিয়েছেন।

“আমাদের সমাজে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।”

ট্রাম্পের বন্ধু ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা নাইজেল ফারাজ ঐ ঘটনার দায় মূলধারার গণমাধ্যমের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন। বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি ঘটনাটিকে "ভয়ঙ্কর" বলে বর্ণনা করেছেন। যদিও তিনি বলেছিলেন যে তিনি এতে পুরোপুরি অবাক হননি।

উজবেকিস্তান

উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিয়োয়েভ সামাজিক মাধ্যম টেলিগ্রামে একটি পোস্টে এই হামলা এবং সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

ভ্যাটিকান

ভ্যাটিকানের প্রেস অফিস থেকে রবিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ করে বলেছে, “এতে মানুষ ও গণতন্ত্র ক্ষতবিক্ষত হয়, দুর্ভোগ ও মৃত্যুর কারণ।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে ভাটিক্যান “আমেরিকার বিশপদের সঙ্গে প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ঐক্যবদ্ধ যারা ঐ ঘটনার শিকার হয়েছেন তাদের জন্য এবং দেশের শান্তির জন্য, যাতে সহিংস শক্তির উদ্দেশ্য কখনই সফল না হয়।”

ভেনিজুয়েলা

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো গুয়াকারা শহরে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় ঐ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।মাদুরো আরও বলেন, “আমরা প্রতিপক্ষ, কিন্তু আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি এবং আমি এই হামলা নিন্দা জানাচ্ছি।”

প্রতিবেদনটির কিছু তথ্য নেয়া হয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এবং এজেন্স ফ্রান্স-প্রেস থেকে।