যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে তাঁকে হত্যার চেষ্টা জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সংকটে ফেলে দিয়েছে। এটি গত তিন বছর ধরে হুমকি বৃদ্ধির দৃশ্যপটের দিকে নতুন করে দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে।
পেনসিলভানিয়ার বাটলারে বন্দুকধারীর হামলায় একজন নিহত হওয়ার পর নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস শনিবার রাতে কিছু এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করছেন। তিনি একে,” অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন” বলছেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ তিনি আরও বলেছেন, "পেনসিলভানিয়ায় আজকের সমাবেশে যে ঘটনা ঘটেছে তা ভয়াবহ। এই দেশে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কোনও জায়গা নেই। ”
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের জন্য ২০২১ সালের জানুয়ারিতেই দেশীয় উগ্রপন্থীদের দ্বারা রাজনৈতিক সহিংসতার সম্ভাবনা একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হিসেবে বিবেচনায় ছিল। সে মাসে উগ্রপন্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ ভবন ক্যাপিটলের ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছিল।
সেপ্টেম্বরে তাদের সর্বশেষ মূল্যায়নে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সম্ভাব্য একক বা ছোট দলের আক্রমণকে "উচ্চ ঝুঁকি" উল্লেখ করে সতর্ক করে দেয়।
দেশীয় উগ্রপন্থীদের হুমকি
তাছাড়া, ২০২৪ সালের নির্বাচনে "সরকারী কর্মকর্তা, ভোটার এবং নির্বাচন সম্পর্কিত কর্মী এবং ভোটের স্থান, ব্যালট ড্রপ বাক্সের অবস্থান, ভোটার নিবন্ধন কেন্দ্র, প্রচারণা অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক দলের অফিস এবং ভোট গণনা কেন্দ্র সহ অবকাঠামো" লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে বলেও সতর্ক করে দেয় তারা।
"এটাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি দ্য সৌফান গ্রুপের গবেষণা পরিচালক কলিন ক্লার্ক ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন। “রাজনৈতিক উত্তেজনা উভয়পক্ষে বেড়েই চলেছে একই সাথে চরমপন্থীরাও শিকড় গেড়েছে,” তিনি বলেন। সামনের দিনগুলো আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত জুনে আইনপ্রণেতাদের পরিস্থিতি বিপদজনক বলে সতর্ক করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই-এর পরিচালক ক্রিস্টোফার রে। “অভ্যন্তরীণ ক্রমাগত সন্ত্রাসী হুমকিকে আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি,” তিনি বলেন।
রাশিয়া ও ইরানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক মাধ্যমকে বিষাক্ত করে তোলা এবং উত্তেজনা উস্কে দেওয়ার অব্যাহত প্রচেষ্টা সম্পর্কেও বারবার সতর্ক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অফ দ্য ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স-এর এক প্রতিবেদনে, নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে 'অভ্যন্তরীণ বিভাজন বাড়ানোর' চেষ্টা করার অভিযোগ আনা হয়েছে মস্কোর বিরুদ্ধে। এতে, তেহরানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করে বলা হয়েছে তারা “বিশৃঙ্খলা” সৃষ্টি করে “সমাজে বিভেদ উস্কে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রতিষ্ঠানের উপর আস্থা দুর্বল” করতে চাইছে।
শনিবার ট্রাম্পের সমাবেশে গুলিবর্ষণের পেছনে এসব কারণের ভূমিকা ছিল কিনা তা এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মানুষের ক্ষোভ অ্যাকশনে পরিণয় হওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।