বিএনপি নেতা আমীর খসরু: ‘শাসকগোষ্ঠী মেধাবীদের খাটো করতে চায়’

কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্লাটফর্ম ‘গণতন্ত্র মঞ্চের’ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভা। শুক্রবার, ১২ জুলাই।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতার জন্য সরকারের সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। কোটা পদ্ধতি এবং এর সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, “আমার অবস্থান পরিষ্কার। এই শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশের মেধাবীদের খাটো করতে চায়।”

শুক্রবার (১২ জুলাই) এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। “আওয়ামী লীগের দুঃশাসন ও রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ সব দিক থেকে ডুবে যাচ্ছে;” আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উল্লেখ করেন।

কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্লাটফর্ম ‘গণতন্ত্র মঞ্চের’ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

“দেশ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভাবে ডুবে গেছে। এখন দেখছেন ঢাকা শহর পানিতে ডুবে যাচ্ছে। আসলে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের কারণেই বাংলাদেশ চতুর্দিকে ডুবছে;” যোগ করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে কারণ এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের পর্যায়ে সক্ষম ও মেধাবীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয় না।

“প্রশাসন যদি দলীয় লোকদের দ্বারা পরিচালিত হয়, তাহলে ঢাকা শহর ডুবে যাবে, পুরো বাংলাদেশ ডুবে যাবে;” আরো বলেন আমীর খসরু।

উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু।বলেন, “কোটা পদ্ধতি নিয়ে আমার অবস্থান পরিষ্কার। এই শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশের মেধাবীদের খাটো করতে চায়।”

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ এভাবে শাসন করতে থাকলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মেধাবীদের কোনো সুযোগ থাকবে না, বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।

“বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে মেধাবী জাতি হিসেবে দেখে বলে মনে হয় না। একটি ফ্যাসিবাদী সরকার কোনো বুদ্ধিমান দেশে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না;” তিনি যোগ করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু আরো বলেন যে বুদ্ধিমান লোকেরা সত্য কথা বলে, সত্যের পথে চলে, আওয়াজ তোলে এবং প্রতিরোধ করে।

কোটা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

ওবায়দুল কাদের: ‘রাজনৈতিকভাবে জবাব দেয়া হবে’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আদালতের নির্দেশনা মেনে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের কোটা বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে দেবে না আওয়ামী লীগ। “এই অরাজনৈতিক আন্দোলন নিয়ে কেউ রাজনীতি করার চেষ্টা করলে আমরা রাজনৈতিকভাবে তার জবাব দেবো;” যোগ করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কুচক্রী গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। গত পাঁচ বছরে কোটার অনুপস্থিতি নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে প্রভাবিত করেছে। একটি বৈচিত্র্যময় ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনের জন্য কোটা অপরিহার্য।

তিনি বলেন, “কোটা কোনো ধরনের বৈষম্য নয়; কিছু বৈষম্য দূর করার জন্য এগুলো প্রয়োজন। কোটা ইস্যুতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, চলমান বিচারিক কার্যক্রম ও আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও, তথাকথিত বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অজুহাতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য শিক্ষার্থীদের উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

সবাইকে সর্বোচ্চ আদালত ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহবান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, “বিক্ষোভের নামে জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়া অবৈধ।”